স্ত্রীকে খুন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন স্বামী। পারিবারিক বিবাদের জেরে দিঘার কাছে পদিমা গ্রামে এক ব্যক্তি ওই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ। পরে দিঘা থানার পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে এবং বিষক্রিয়ায় অসুস্থ স্বামীকে উদ্ধার করে প্রথমে দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতাল ও পরে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম জ্যোৎস্না সুর (২৭)। মঙ্গলবার সকাল ৮টা নাগাদ তাঁর গলা কাটা দেহ বাড়িতে খাটের উপর পড়েছিল। আর তাঁর স্বামী নিত্যানন্দ সুর কীটনাশক খেয়ে পাশেই বিষক্রিয়ায় চটপট করছিলেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, প্রায় ১১ বছর আগে পদিমা গ্রামের বাসিন্দা নিত্যানন্দের সঙ্গে বিলাআমডিয়া গ্রামের জোৎস্নার বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের বছর পাঁচেক পর তাঁদের এক সন্তান হয়েছিল। কিন্তু তিন দিনের মাথায় সেই শিশুর মৃত্য হয়। আবার বছর দুয়েক আগেও ওই দম্পতির এক সন্তান জন্মের দিন দশকের পর মারা যায়। প্রতিবেশীদের দাবি, উভয় ক্ষেত্রেই নিদিষ্ট সময়ের আগে সুর দম্পতির সন্তান জন্মেছিল করেছিল। এরপর থেকে কিছুটা হতাশায় ভুগছিলেন বছর আটত্রিশের নিত্যানন্দ।
সাংসারিক কলহের জন্য জ্যোৎস্নাদেবী জ্যোৎস্নাদেবী বাবার বাড়ি চলে গিয়েছিলেন মাস খানেক আগে। তবে মঙ্গলবারই শ্বশুর বাড়িতে ফিরেছিলেন তিনি। এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ প্রতিবেশীরা তাঁদের বাড়ি থেকে চিৎকার শুনতে পান। ছুটে যান প্রতিবেশীরা। তাঁদের দাবি, বাড়ির দরজা এবং জানালা বন্ধ ছিল। জানলা ভেঙে বাড়িতে ঢুকে দেখা যায়, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন জোৎস্নাদেবী। পাশের রুমেই কীটনাশক খেয়ে যন্ত্রনায় ছটপট করছেন নিত্যানন্দ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় দিঘা থানার পুলিশ। তারা বাড়ি থেকে রক্ত মাখা ছুরি, বালিশ ও সেই কীটনাশকের বোতল উদ্ধার করেছে।
প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা, পারিবারিক ঝামেলার জন্য স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে চিড় ধরেছিল। এ দিন স্ত্রী বাবার বাড়ি থেকে ফিরে আসার পর সেই বিবাদ চরমে আকার নয়। তখনই ছুরি দিয়ে স্ত্রীর গলা কেটে স্বামী হত্যা করেন বলে অভিযোগ। তারপর তিনিও কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন।
জ্যোৎস্নাদেবীর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। সন্তান না হওয়ার কারণে স্বামী-স্ত্রীর কলহ কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে পারিবারিক কলহের জন্য স্বামী স্ত্রীকে খুন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তবে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।’’