—প্রতীকী চিত্র।
এলাকার মন্দিরে চুরির অভিযোগে এক যুবককে ঘিরে ধরে বেধড়ক মারধর করলেন গ্রামবাসীরা। রক্তাক্ত ওই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর। শুক্রবার এ নিয়ে চাঞ্চল্য পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল থানার অমৃতবেড়িয়া গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত যুবকের নাম সহদেব বেরা। বয়স ৪২ বছর। বাড়ি নন্দকুমার থানার কেশবপুর গ্রামে। তাঁর মৃত্যুতে পরিবার এ পর্যন্ত থানায় অভিযোগ করেনি। তবে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, গত মঙ্গলবার গভীর রাতে দুটি বাইকে চড়ে তিন জন অমৃতবেড়িয়া গ্রামের একটি কালীমন্দির এবং একটি শীতলা মন্দিরের তালা ভেঙে দেবতার গয়নাগাটি-সহ পিতলের বাসন চুরি করে। এর পর চুরির মালপত্র ব্যাগে ভরে বাইকে করে পালানোর সময় এলাকাবাসীদের ঘুম ভেঙে যায়। তাঁদের তাড়া খেয়ে সহদেব বেরা নামে এক যুবক বাইক নিয়ে পালাতে গিয়ে পড়ে যান। গ্রামবাসীরা তাঁকে পাকড়াও করে হাত পিছমোড়া করে বেঁধে মারধর করেন বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে রাস্তায় ফেলে রেখেই চলে যান অভিযুক্তেরা।
খবর পেয়ে অকুস্থল থেকে গুরুতর জখম অবস্থায় যুবককে উদ্ধার করে মহিষাদল থানার পুলিশ। প্রথমে বাসুলিয়া গ্রামীন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল যুবককে। পরে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় তাম্রলিপ্ত জেলা সদর হাসপাতালে। সেখানে মৃত্যু হয় সহদেবের।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মৃত যুবক এলাকায় ‘দাগি চোর’ হিসাবে পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে আগেও একাধিক চুরির অভিযোগ রয়েছে। আশপাশের একাধিক চুরির ঘটনার পর ওই যুবক বেশ কিছু দিন গা-ঢাকা দেন। চুরির ঘটনার দিন দুয়েক বাড়ি ফিরে আবার মন্দিরে চুরির চেষ্টা করেন তিনি। অন্য দিকে, মৃত সহদেবের বড় ভাই মহাদেব বেরার দাবি, ‘‘আমার ভাইয়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে পুলিশে মামলাও চলছে। তবে তাঁকে পাকড়াও করে অমৃতবেড়িয়ার গ্রামবাসীরা যে নৃশংসতার সঙ্গে পিটিয়ে মেরেছে তা মেনে নেওয়া যায় না। রাতভর পিছমোড়া করে বেঁধে রেখে বাঁশ, রড দিয়ে ভাইকে মারা হয়েছে। এর পর রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে রাস্তায় ফেলে রেখে দেওয়া হয়। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।’’
পিটিয়ে মারার অভিযোগ প্রসঙ্গে অমৃতবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য প্রবীর প্রামাণিকের মন্তব্য, “ওই যুবক একাধিক চুরির ঘটনায় জড়িত। তবে এ ভাবে আইন হাতে তুলে নিয়ে ওই যুবককে যে ভাবে গণধোলাই দিয়ে মারা হয়েছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। পুলিশ আইন মেনে ব্যবস্থা নেবে বলেই আশা করছি।”