দল আন্দোলনে নেই, অধীরকে খোঁচা মানসের

নাম না- করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে খোঁচা দিলেন সবংয়ের বিধায়ক তথা প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মানস ভুঁইয়া। শনিবার মেদিনীপুরে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমাদের দল ঠিক ভাবে চলছে না। অনেক বেশি আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলনের গতি ধীর! ব্লকে, জেলাতে, রাজ্যেও। কংগ্রেসের পতাকা নিয়ে কাজ করার জন্য মানুষ মুখিয়ে রয়েছেন। কর্মীদের আরও সক্রিয় করতে হবে।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৫ ০৩:২২
Share:

মানস ভুঁইয়া। — নিজস্ব চিত্র।

নাম না- করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে খোঁচা দিলেন সবংয়ের বিধায়ক তথা প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি মানস ভুঁইয়া।
শনিবার মেদিনীপুরে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমাদের দল ঠিক ভাবে চলছে না। অনেক বেশি আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলনের গতি ধীর! ব্লকে, জেলাতে, রাজ্যেও। কংগ্রেসের পতাকা নিয়ে কাজ করার জন্য মানুষ মুখিয়ে রয়েছেন। কর্মীদের আরও সক্রিয় করতে হবে।” অধীর চৌধুরী কি দলকে আন্দোলনমুখী করতে ব্যর্থ? মানসবাবুর জবাব, “অধীরবাবু চেষ্টা করছেন! সবাই মিলে সম্মিলিত ভাবে কাজটা করতে হবে।” রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ অবশ্য মনে করছেন, নিজের বক্তব্যে নাম না- করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকেই খোঁচা দিয়েছেন সবংয়ের বিধায়ক।
আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল এবং বিজেপিকে রুখতে কংগ্রেসের সঙ্গে বামেদের আসন সমঝোতার সম্ভাবনা খোলা রয়েছে বলে শুক্রবারই ইঙ্গিত দেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দেব। এই নিয়ে রাজ্য- রাজনীতিতে আলোড়নও পড়ে। মানসবাবু অবশ্য শনিবার জানিয়ে দিয়েছেন, এ ব্যাপারে মন্তব্য করার সময় এখনও আসেনি। গৌতম দেব কংগ্রেসের জন্য দরজা খোলা রাখার বার্তা দিয়েছেন। কংগ্রেস কি আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতায় যাবে? মানসবাবু বলেন, “কংগ্রেস জাতীয় দল। আমরা রাজ্য শাখার কর্মী। নীতিগত কারণে কোনও সিদ্ধান্ত যদি দল নেয়, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সর্বভারতীয় স্তরে। একেবারে সর্বোচ্চ স্তরে এআইসিসি- তে। প্রাদেশিক স্তরে এই নিয়ে কথা বলার কোনও সুযোগ নেই, অবকাশ নেই, অধিকার নেই।” তাঁর কথায়, “কোনও প্রস্তাব সিপিএমের পক্ষ থেকে কংগ্রেসকে দেওয়া হয়েছে বলে আমার জানা নেই। এ ব্যাপারে কোনও আলোচনা শুরু হয়েছে বলেও আমার জানা নেই।”

Advertisement

জেলা ভিজিল্যান্স ও মনিটরিং কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে শনিবার মেদিনীপুরে আসেন মানসবাবু। দুপুরে জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে তিনি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন। সবংয়ের বিধায়ক বলেন, “সিপিএম কখনও কংগ্রেসকে এক নম্বর শত্রু বলে, কখনও দু’নম্বর শত্রু বলে। তৃণমূল কখনও বিজেপিকে এক নম্বর শত্রু বলে, কখনও কংগ্রেসকে দু’নম্বর শত্রু বলে, কখনও বা কংগ্রেসকে এক নম্বর শত্রু বলে। এই শত্রু বাছাই কংগ্রেস করে না! ’’

মানসবাবুর কথায়, ‘‘কংগ্রেসের সামনে একটা নির্দিষ্ট নীতি- আদর্শ এবং কর্মসূচি রয়েছে। লড়াইয়ে আমরা কখনও হেরেছি। তবে পিছিয়ে আসিনি। আদর্শ ত্যাগ করিনি। এই আদর্শ স্তম্ভের কাছে কে আসবে, কে আসবে না, এটা তাদের ব্যাপার! কংগ্রেসের এ ব্যাপারে মন্তব্য করার সময় আসেনি।”

Advertisement

পাশাপাশি, মানসবাবু বলেন, “মনে রাখতে হবে, পশ্চিমবাংলার প্রেক্ষাপট আলাদা। ৩৪ বছরে ১৭ হাজার কংগ্রেস কর্মী খুন হয়েছেন সিপিএমের হাতে। আমার মা- বোনেদের ইজ্জত গিয়েছে।”

সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আটকাতে কংগ্রেসকে এক সময় বামেরা সমর্থন করেছিল বলে শুক্রবার মনে করিয়ে দেন গৌতম দেব। সেই প্রসঙ্গ টেনে সবংয়ের বিধায়ক বলেন, “অনেকে বলছেন, সাড়ে চার বছর সমর্থন করেছেন। তাঁদের গরজে সমর্থন করেছেন! কারণ, তাঁদের ঘোষণা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে হবে। যারা ধর্মনিরপেক্ষতার হয়ে লড়াই করে, যারা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে চায়, তাদের তো কংগ্রেসকে নিয়ে আলোচনা করতেই হবে। বাদ দেওয়ার কোনও জায়গা রয়েছে না কি! কেউ লুকিয়ে করে, কেউ প্রকাশ্যে করে!”

এই সময়ের মধ্যে বহু কংগ্রেস নেতা- কর্মী তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন। কয়েকজন কংগ্রেস বিধায়কও দল বদল করেছেন। মানসবাবুর তৃণমূলে যোগ দেওয়া নিয়ে একাধিক মহলে জল্পনা ছড়িয়েছে। সবংয়ের বিধায়ক অবশ্য এই জল্পনায় জল ঢেলে দেন। এদিন তিনি বলেন, “আদর্শকে ভিত্তি করে অত্যাচারের মুখে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করি। কেউ যদি গল্প করেন করবেন। আর যদি কোনও দিন মত পরিবর্তন করি, প্রথম মেদিনীপুরের এই অফিসেই তা ঘোষণা করব!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন