পাশাপাশি। নারায়ণগড়ে মানস ভুঁইয়া ও সূর্যকান্ত মিশ্র। রবিবার। — নিজস্ব চিত্র।
ভোট যত এগিয়ে আসছে জোটের আবহ ততই শক্ত হচ্ছে। রবিবার একই মঞ্চে দেখা গেল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ও প্রদেশ কংগ্রেস নেতা মানস ভুঁইয়াকে। দু’জনেই এ বার জোট প্রার্থী। সূর্যবাবু নারায়ণগড়ের সিপিএম প্রার্থী। আর মানসবাবু সবংয়ের কংগ্রেস প্রার্থী।
এ দিনের সভায় ছিল দুই কেন্দ্রের প্রায় মাঝামাঝি। সবং সীমানা থেকে তিন কিলোমিটার দূরে নারায়ণগড় বিধানসভার মদনমোহনচকের সভায় উপস্থিত ছিলেন একদা যুযুধান দুই নেতা। সভা শুরুর আগে একসঙ্গে মিছিলে পা-ও মেলান মানস-সূর্য। সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেস ও সিপিএম কর্মীরা। রাজ্য জুড়ে যে ছবিটা তৃণমূলকে ভাবাচ্ছে, সেই ছবিটাই দেখা গেল নারায়ণগড়েও। সভাস্থল ভরে গিয়েছিল লাল-তেরঙ্গা পতাকায়।
সৌজন্যের আবহে ভরা মঞ্চে মানস ভুঁইয়া এ দিন সূর্যকান্ত মিশ্রকে দেখিয়ে বলেন, “এই মানুষটি পশ্চিমবঙ্গের ব্যাভিচারী, উন্মাদ সরকার উচ্ছেদ করতে যে ঐতিহাসিক আন্দোলন শুরু করেছিলেন তা আগামীদিনে ভারতের রাজনীতির দিকনির্দেশ করবে। উনি বলেছিলেন জনগণের জোট চাই। তাই এই লাল ও তেরঙ্গা একজোট বেঁধেছে।” এর পরে মানসবাবু পাঁচবছরের তৃণমূল সরকারের সমালোচনা করে বলেন, “প্রতিবাদ করতে হবে। একটা নতুন সূর্যোদয় দেখতে পাচ্ছি। আমি আমার ৪৫বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা পরিবর্তনের পরিবর্তন হবে। নেতৃত্ব দেবেন সূর্যকান্ত মিশ্র।” এ দিন সূর্যকান্ত মিশ্র মঞ্চে তাই বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী আপনি থাকবেন ১৯মে পর্যন্ত। তারপরে রাজভবনে গিয়ে আপনাকে পদত্যাগ করতে হবে।”
প্রায় একই সুরে সভা হয়েছে দাঁতনেও। রবিবার বিকেলে দাঁতনের হাসপাতাল মোড় থেকে সরাইবাজার পর্যন্ত প্রায় আট হাজার মানুষের মিছিলে পা মেলান সূর্যকান্ত মিশ্র ও কংগ্রেসের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি বিকাশ ভুঁইয়া। এরপরই সভা হয় সংলগ্ন সংহতি ময়দানে। সভামঞ্চ থেকে বুথে বুথে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক দেন সূর্যবাবু। রবিবার দাঁতনে বাম-কংগ্রেস যৌথ সভায় সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘‘নারদের ভিডিও-তেই তো রাজ্যের এক মন্ত্রী স্বীকার করেছেন পুলিশের সাহায্য নিয়ে বিরোধীদের এজেন্টকে বুথেই বসতে দেয়নি তৃণমূল। সুতরাং লড়াইটা হবে আসলে আপনাদের বুথে।’’ সাফ বলেন, “তৃণমূল ভাঙছে। সবাই মিলে বুথে বুথে গণ প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।”
বিকাশবাবু তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেন, অতীত থেকে কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট কী ভাবে বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে সহযোগী ভূমিকা পালন করে এসেছে। ভবিষ্যতে রাজ্যে ক্ষমতায় এসে তাঁরা একই ভূমিকা পালন করবেন। এই সূত্রে তিনি বলেন, “মানুষ প্রস্তুত। বাম গণতান্ত্রিক জোটের জয় হবে।” পরে সূর্যবাবু বলেন, “আপনাদের রাগ যাই থাক, ১৯ মের পরে যেন ওদের (তৃণমূলের) একজন লোকের গায়েও আঁচড় না লাগে। দায়িত্ব আপনাদের।” সভায় সূর্যবাবু কটাক্ষ করেন, এখন জঙ্গলমহলে খুব আনাগোনা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। আসছেন হেলিকপ্টারে। আসলে তাঁর সভায় লোক হচ্ছে না। তাই হেলিকপ্টার দেখিয়ে সভায় লোক টানার চেষ্টা করছেন।