মহার্ঘ মাটি, চিন্তায় কুমোরপাড়া

নদীর জল বাড়ায় মিলছে না মাটি। বাজারেও মাটির দাম আকাশ ছোঁয়া। কুমোরপাড়ায় উদ্বেগের ছায়া।

Advertisement

সৌমেশ্বর মণ্ডল

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৪৫
Share:

শুকোতে দেওয়া হচ্ছে তুবড়ির খোল। মেদিনীপুরের কুমোরপাড়ায়। —নিজস্ব চিত্র।

নদীর জল বাড়ায় মিলছে না মাটি। বাজারেও মাটির দাম আকাশ ছোঁয়া। কুমোরপাড়ায় উদ্বেগের ছায়া।

Advertisement

প্রদীপ, পুতুল-সহ বিভিন্ন জিনিস তৈরির জন্য কংসাবতী থেকে মাটি সংগ্রহ করেন কুমোরেরা। গরমে নদীর জল কমে গেলে মাটি সংগ্রহে সুবিধা হয়। অ্যানিকেত বাঁধ তৈরি হওয়ায় কংসাবতীতে এ বছর জল বেশি রয়েছে। ফলে নদী থেকে মাটি পাচ্ছেন না কুমোররা।

মেদিনীপুরের নজরগঞ্জ এলাকায় নদীর ভাঙনের জন্য এলাকার বসিন্দারা মাটি তুলতে বাধা দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। লক্ষ্মীকান্ত পালের অভিযোগ, ‘‘নদীর পাড় থেকে মাটি নিতে গেলে মারধর করা হচ্ছে। নদীর পাড়ে ভাঙা কাচের টুকরো ছড়িয়ে রাখা হচ্ছে, যাতে আমরা ওখানে যেতে না পারি”।

Advertisement

কুমোর পাড়ার এক ব্যক্তির কথায়, অনেক দূর থেকে দ্বিগুণেরও বেশি দাম দিয়ে মাটি কিনে নিয়ে আসতে হচ্ছে। আগে এক ট্রাক্টর মাটি দু’হাজার টাকা নিত, এখন সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা দাম দিয়েও মাটি পাওয়া যাচ্ছে না।

মাটির হাঁড়ি, সরা, দইয়ের খুরি, ধুনুচি, ফুলের টব সারা বছরই তৈরি হয়। কালীপুজোর সময় তুবড়ির খোল, মাটির প্রদীপ ও পুতুলেরও চাহিদা থাকে। এই সব মাটির জিনিসপত্র পোড়ানোর জন্য প্রয়োজন কাঠ। মাটির পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বেড়েছে কাঠের দামও। মাটির পুতুল রং করতে ব্যস্ত বাসন্তী পাল বলছিলেন, “পুতুল তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম বেড়েছে। কিন্তু একই দামে মাটির জিনিস বিক্রি করতে হচ্ছে। সারা বছর খেটেও সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। এ বার দাম বাড়ানোর কথা ভেবেছি।’’ পুতুলের চোখ আঁকছিলেন মুক্তো দাস। একইভাবে তিনিও বলেন, ‘‘মাটির জন্য সমস্যায় রয়েছি। কেউ আমাদের কথা শোনেননি।’’ কুমোর অরূপ পালের অভিযোগ, ‘‘সরকার বড় শিল্পের জন্য এত কিছু করছে, আমাদের কথা কেউ ভাবে না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘মাটি পাইনি, গতবছরের মাটি দিয়ে পুতুল বানিয়েছি।’’ মেদিনীপুরের পুরসভার পুরপ্রধান প্রণব বসু বলেন, ‘‘কুমোররা মিলিতভাবে তাঁদের সমস্যার কথা জানালে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন