শুরু প্রাক-প্রাথমিকেই

রক্তাল্পতা রোধে ওষুধ খুদেদেরও

রক্তাল্পতার সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। কমবয়সী বহু ছেলেমেয়েও রক্তাল্পতার শিকার। সমস্যার সমাধানে এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরের স্কুলে প্রাক প্রাথমিকস্তর থেকেই পড়ুয়াদের ওষুধ খাওয়ানো শুরু হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:১৯
Share:

রক্তাল্পতার সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। কমবয়সী বহু ছেলেমেয়েও রক্তাল্পতার শিকার। সমস্যার সমাধানে এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরের স্কুলে প্রাক প্রাথমিকস্তর থেকেই পড়ুয়াদের ওষুধ খাওয়ানো শুরু হবে। আগামী জানুয়ারি মাস থেকে ‘জুনিয়র উইফস্’ কর্মসূচির অধীনে প্রতি সোমবার মিড-ডে মিল খাওয়ার পরে পড়ুয়াদের দেওয়া হবে এই ট্যাবলেট।

Advertisement

কর্মসূচির সুষ্ঠু রূপায়ণের জন্য ইতিমধ্যে একাধিক বৈঠকও হয়েছে। সম্প্রতি দু’দফায় মেদিনীপুরে বৈঠক হয়েছে। একদফার বৈঠকে ছিলেন এডিএম, সিএমওএইচ, ডেপুটি সিএমওএইচ, ডিআই-রা। পরে আর এক দফার বৈঠকে বিএমওএইচ, এসআই-রা ছিলেন। বৈঠকে কর্মসূচি রূপায়ণের নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কর্মসূচি শুরুর আগে স্কুলগুলোকেও বৈঠক করার কথা বলা হয়েছে। যে বৈঠকে অভিভাবকেরা থাকবেন। কেন এই কর্মসূচি তা অভিভাবকদের জানানো হবে। এ ব্যাপারে অভিভাবকদের সচেতন করা হবে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “রক্তাল্পতা রোধে এ বার প্রাক্ প্রাথমিক থেকেই ছাত্রছাত্রীদের ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে। এ জন্য এক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। জেলায় জানুয়ারি থেকেই এই কর্মসূচি শুরু হবে।” গিরীশচন্দ্রবাবুর কথায়, “এ নিয়ে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে কর্মসূচি রূপায়ণের বিভিন্ন দিক নিয়েই আলোচনা হয়েছে।”

রক্তাল্পতা রোধে ওষুধ খাওয়ানোর কর্মসূচি নতুন নয়। তবে এতদিন প্রাক প্রাথমিকস্তরে এই কর্মসূচি হয়নি। ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের ট্যাবলেট খাওয়ানো হত। এ বার প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদেরও ট্যাবলেট খাওয়ানো হবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এটি একটি ছোট গোলাপি রঙের ট্যাবলেট। ট্যাবলেটটিতে ৪৫ মিলিগ্রাম এলিমেন্টাল আয়রন ও ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফোলিক অ্যাসিড রয়েছে। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “ছোটরা নিজে থেকে এই ট্যাবলেট খেতে গেলে সমস্যা হতে পারে। তাই শিক্ষকেরাই জল সহযোগে পড়ুয়াদের ট্যাবলেট খাওয়াবেন। ট্যাবলেটটি সব সময় খাবার পরেই খাওয়াতে হবে। খালি পেটে খাওয়ানো যাবে না। মিড ডে মিল খাওয়ার পরেই এই ট্যাবলেটটি খাওয়াতে হবে। এ কথা স্কুলগুলোকে জানানো হবে।”

Advertisement

জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৬ থেকে ৯ বছরের মধ্যে প্রতি ১০ জন ছেলেমেয়ের মধ্যে ৭ জন রক্তাল্পতাজনিত সমস্যায় ভোগে। ফলে, এই সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হতেই হবে।” এই ট্যাবলেট পুরোপুরি নিরাপদ বলে জানিয়েছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। জেলার ওই স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “প্রথমের দিকে কারও বমি বমি ভাব, মুখে বিস্বাদ ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। কিন্তু এটা সাময়িক। এ জন্য ট্যাবলেট খাওয়া বন্ধ করার কোনও দরকার নেই। ধীরে ধীরে এই সমস্যাগুলো নিজে থেকেই কমে যাবে। খাবার খেয়ে এই ট্যাবলেট খেলে এই সমস্যা অনেক কম হবে।” ওই স্বাস্থ্যকর্তার সংযোজন, “প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির সকল পড়ুয়াকে কর্মসূচির আওতায় আনা প্রয়োজন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন