Midnapore Medical College

ভুয়ো শংসাপত্র, বহিষ্কৃত মেডিক্যালের ছাত্রী

বহিষ্কৃত প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রীর বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের একটি এলাকায় বলে কলেজ সূত্রে খবর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:২১
Share:

মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ।

মেডিক্যালে ভর্তিতে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা হয়েছিল হাই কোর্টে। সেই মামলা আপাতত সরেছে সুপ্রিম কোর্টে। এই আবহে এক ছাত্রীকে বহিষ্কার করল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ। মেয়েটি ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র দিয়ে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষা মৌসুমী নন্দী মানছেন, ‘‘এক ছাত্রীকে কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁর ভর্তি বাতিল করা হয়েছে। ভর্তির ক্ষেত্রে ছাত্রীটি ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র ব্যবহার করেছিলেন।’’ তবে শুধু বহিষ্কার নয়, ওই ছাত্রীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছে আদিবাসী কল্যাণ সমিতি, ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের মতো বিভিন্ন জনজাতি সংগঠন। পারগানা মহলের নেতা শিবুলাল মুর্মু বলেন, ‘‘অবিলম্বে ওই ছাত্রীকে গ্রেফতার করতে হবে। পাশাপাশি, জাল শংসাপত্র দেওয়ার সঙ্গে যে সব প্রশাসনিক আধিকারিক জড়িত, তাঁদেরও গ্রেফতার করতে হবে।’’ মেদিনীপুর মেডিক্যালের ছাত্রী সায়নী টুডুর মতে, ‘‘যে বা যাঁরা জাল জাতিগত শংসাপত্র দেখিয়ে কলেজে ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের সবার ভর্তি বাতিল হওয়া উচিত।’’

বহিষ্কৃত প্রথম বর্ষের ওই ছাত্রীর বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের একটি এলাকায় বলে কলেজ সূত্রে খবর। ২০২৩-’২৪ শিক্ষাবর্ষে তিনি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। ওই ছাত্রীকে এক লক্ষ টাকা কলেজে জমা দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ পেয়ে কলেজে আসা বন্ধ করেছে ছাত্রীটি। বহিষ্কার প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাননি ওই ছাত্রী। তবে তাঁর বাবা বলেন, ‘‘মেয়ে কলেজের ওই নির্দেশিকা পেয়েছে। বিষয়টি বিচারাধীন। এখনই কিছু বলব না। পরে বলব।’’

Advertisement

ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র ব্যবহার করে অনেকে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছেন অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন ঈতিশা সরেন। মামলাকারী হাই কোর্টে বেশ কয়েকজনের নামও জমা দেন। তাঁদের প্রত্যেকের জাতি শংসাপত্র খতিয়ে দেখতে বলেছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁদের মামলায় যুক্ত করারও নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। পাশাপাশি মেডিক্যালে ভর্তি মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। পরে এ নিয়ে হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি সৌমেন সেনের মধ্যেকার সংঘাত প্রকাশ্যে আসে। তারপর স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। মেডিক্যালে ভর্তি মামলা নিজের হাতে নিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত।

মামলাকারী হাই কোর্টে যাদের নাম জমা দিয়েছিলেন, তার মধ্যে থেকে এমন ১৪ জনকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে, যারা ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র ব্যবহার করেছিল। অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতর ওই ১৪ জন ছাত্রছাত্রীর ভুয়ো জাতিগত শংসাপত্র বাতিল করেছে। মেদিনীপুর মেডিক্যালের ওই ছাত্রী এদেরই একজন। জানা গিয়েছে, রাজ্যের স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তার দফতর থেকে মেডিক্যালে এক নির্দেশ এসেছিল। সেখানে হাই কোর্টের একটি নির্দেশেরও উল্লেখ ছিল। মেডিক্যাল সূত্রে খবর, এরপরই ওই ছাত্রীকে কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ওই সূত্র মনে করাচ্ছে, হাই কোর্টই এমন ছাত্রীকে কলেজ থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছিল।

মেডিক্যালের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ওই ছাত্রীর জাল জাতিগত শংসাপত্র দেখিয়ে ভর্তি হওয়ার বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। তাই ওঁকে কলেজ থেকে বহিষ্কারই করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন