প্রতীকী ছবি।
হাতে সময় কম। কাজ অনেক। কাজ হল, শিক্ষকদের হাতে বদলির চিঠি ধরানো। আর তা ধরাতে হবে, আজ, সোমবারের মধ্যে। বদলির সেই চিঠি হাতে নিয়েই কাল, মঙ্গলবার নতুন স্কুলে যোগ দেওয়ার কথা শিক্ষকদের। সেই কাজ করতেই ছুটির দিনেও ব্যস্ত জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। শনি ও রবিবার কাজ চলল পুরোদমে। সংসদের এক আধিকারিকের স্বীকারোক্তি, ‘‘আসলে সময় খুব অল্প। তাই ছুটির দিনেও কাজ করতে হয়েছে।’’
কিন্তু সোমবারের মধ্যে কি সংশ্লিষ্ট সমস্ত শিক্ষকদের হাতে বদলি- চিঠি ধরানো সম্ভব হবে? জেলার এক অবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের মন্তব্য, ‘‘বুঝতে পারছি না সোমবারের মধ্যে বদলি হওয়া সব শিক্ষকের কাছে বদলি- চিঠি পৌঁছবে কি না। না- পৌঁছলে তো মঙ্গলবার তাঁরা নতুন স্কুলে যোগও দিতে পারবেন না। এ এক সমস্যাই।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আরও কিছুটা সময় দেওয়া হলে ভাল হত।’’ তবে সদুত্তর এড়িয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান নারায়ণ সাঁতরা বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশ মেনে যা পদক্ষেপ করার করা হচ্ছে।’’
শহরের দিকে অনেক স্কুলে ছাত্রের তুলনায় শিক্ষক বেশি ছিলেন। আবার প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলগুলো পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাবে ধুঁকছিল। পড়ুয়া ও শিক্ষক অনুপাতে ভারসাম্য আনতে বদলি করা হয়েছে রাজ্যের কয়েকটি জেলার ২,৮৭৩ জন প্রাথমিক স্কুল শিক্ষককে। এরমধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ৯০৫ জন শিক্ষক রয়েছেন। সূত্রের খবর, শুক্রবার অফিসের ই মেলে যখন এই নির্দেশ এসে পৌঁছয়, তখন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের অফিস বন্ধ হয়ে গিয়েছে। নির্দেশ পেয়ে যেন ঘাম ছোটে শিক্ষা সংসদের! তড়িঘড়ি সরকারি নির্দেশ মতো যাবতীয় পদক্ষেপ করার প্রস্তুতি শুরু হয়। শনিবার ছুটির দিন ছিল। তা সত্ত্বেও সংসদের অফিসে আসেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান। আসেন অন্য আধিকারিক- কর্মীরা। আধিকারিকদের নিয়ে প্রয়োজনীয় আলোচনা সারেন সংসদের চেয়ারম্যান। রবিবারও তিনি অফিসে আসেন।
শিক্ষার অধিকার আইন অনুযায়ী, পড়ুয়া সংখ্যা দেড়শোর মধ্যে হলে প্রতি ৩০ জন ছাত্রপিছু একজন করে শিক্ষক থাকবে। ছাত্র সংখ্যা তার বেশি হলে প্রতি ৪০ জন ছাত্রপিছু একজন করে শিক্ষক থাকার কথা। সম্প্রতি জেলা স্কুল পরিদর্শকদের সঙ্গে বৈঠকে ঘাটতি থাকা স্কুলে শিক্ষক পাঠানোর কাজ শুরু না- হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, ‘‘স্কুলে শিক্ষক ও পড়ুয়াদের হিসেব কষা আগেই শুরু হয়েছিল। কোন স্কুলে শিক্ষক বেশি রয়েছে, কোন স্কুলে কম রয়েছে, তার একটি তালিকাও তৈরি হয়েছিল। তালিকা রাজ্যে পাঠানোও হয়েছিল।’’