বেহাল: নেই দরজা। এমন অবস্থা এগরার এক এটিএমে। নিজস্ব চিত্র
দিন কয়েক আগের কথা। মেয়েকে নিয়ে এগরার জুমকি বটতলা বাজার সংলগ্ন এটিএমে ঢুকেছিলেন সুমিতা পতি। সবে ব্যাগ থেকে এটিএম কার্ডটা বার করতে যাবেন, এমন সময়ে জনা চারেক যুবক ঢুকে পড়েন এটিএমের ভিতর। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে টাকা না তুলেই এটিএম থেকে বেরিয়ে যান সুমিতা দেবী।
তার কয়েক দিন পরে। ঘটনাস্থল একই। এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএমে টাকা তুলতে গিয়েছিলেন স্থানীয় যুবক পীযূষ পতি। টাকা তোলার আগেই মাঝবয়সী তিন ব্যক্তি চোখ রাঙিয়ে তাঁকে বলেন, দ্রুত টাকা তুলুন। বিপদ বুঝে এটিএম ছেড়ে চলে যান পীযূষ।
আর এই প্রতিটি ঘটনার সময়েই এটিএমে নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন না। জুমকির এই এটিএমের দরজাও ভাঙা। আর তার ফল ভুগছেন সুমিতাদেবী, পীযূষরা। গত ২১ সেপ্টেম্বরের এগরার ভবানীচকে বাসস্ট্যান্ডের কাছে এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম মেশিন ভেঙে টাকা লুঠের চেষ্টা চালায় দুষ্কৃতীরা। যদিও শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি তারা। কিন্তু এই ঘটনা থেকে ব্যাঙ্কগুলো যে শিক্ষা নেয়নি, তা বোঝা যাবে এগরার কয়েকটি এটিএমে ঘুরলেই।
এগরা থানা এলাকায় প্রায় ২০টি এটিএম রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ এটিএমে নেই নিরাপত্তারক্ষী। এমনকী অনেক এটিএমে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থাও নেই। ফলে রাতে এটিএম-এ গিয়ে নিরাপত্তা অভাব বোধ করেন এগরাবাসী। স্থানীয়দের অভিযোগ, সহজে টাকা তুলতে গ্রাহকদের এটিএম ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। অথচ এগরার জনবহুল শহরে এটিএম পরিষেবার পরিকাঠামো বেহাল। সুমিতাদেবীর কথায়, “অনেক সময়েই এটিএম-এর ভিতরে মদ্যপেরা ঢুকে পড়ে। কোনও নিরাপত্তা নেই।” তবে এই সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার এক পুলিশ আধিকারিকও। তিনি বলেন, “এটিএমের রক্ষী-সহ পরিকাঠামোর বিষয়টির দায়িত্ব ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের। রাস্তায় পুলিশ টহল থাকে। পুলিশ তো আর এটিএম পাহারা দেবে না!”
এগরার কলেজপড়ুয়া মধুমিতা সাউ, অমিত পণ্ডাদের ক্ষোভ, গ্রাহকদের নিরাপত্তা নিয়ে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কোনও মাথাব্যথা নেই। নিরাপত্তারক্ষী না থাকায় এটিএম-এর ভিতর কেউ থাকলেও অন্য লোক জন ঢুকে পড়ছেন। টাকা তুলতে গিয়ে ত্রস্ত হয়ে রয়েছেন সাধারণ মানুষ।” অভিযোগ বিষয়ে এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মুখ্য প্রবন্ধক পারিজাত হাজরা বলেন, “বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।”