নয়াগ্রামে চিতল হরিণ সংরক্ষণের দাবি

পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রাম ব্লকের জঙ্গলে চিতল হরিণ সংরক্ষণের দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগ, সীমানাবর্তী ওড়িশার চোরা শিকারিরা প্রায়ই হরিণ মেরে লোপাট করে দিচ্ছে। স্থানীয় কিছু লোকজনও অবাধে হরিণ শিকার করছেন।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৬ ০০:০০
Share:

হারিয়ে যাচ্ছে চিতল হরিণ। — নিজস্ব চিত্র।

পশ্চিম মেদিনীপুরের নয়াগ্রাম ব্লকের জঙ্গলে চিতল হরিণ সংরক্ষণের দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

Advertisement

অভিযোগ, সীমানাবর্তী ওড়িশার চোরা শিকারিরা প্রায়ই হরিণ মেরে লোপাট করে দিচ্ছে। স্থানীয় কিছু লোকজনও অবাধে হরিণ শিকার করছেন। হরিণদের বাঁচাতে নয়াগ্রামে একটি প্রাকৃতিক মৃগদাব কেন্দ্র (ডিয়ার পার্ক) গড়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের তরফে বন দফতরকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

নয়াগ্রাম ব্লকের ঘন জঙ্গলে এক সময় প্রচুর হরিণ ছিল। এ ছাড়াও ঝাড়গ্রাম চিড়িয়াখানায় চিতল হরিণের সংখ্যা বেড়ে গেলে তখন বেশ কিছু সংখ্যক হরিণ নয়াগ্রামের জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়। কয়েক বছর আগেও নয়াগ্রামের বিরিবাড়িয়া, তপোবন, পাঁচকাহানিয়া, খাঁকড়ি, কুড়চিবনি, খানামুড়ি, খড়িকা, উঠান নয়াগ্রাম ও কালুয়াষাড়ের মতো জঙ্গলগুলিতে শয়ে শয়ে হরিণদের দল বেঁধে ঘুরতে দেখা যেত। এখন সেই সংখ্যাটা দিন দিন কমে যাচ্ছে বলে অভিযোগ। সূত্রের খবর, একটি দুষ্টচক্র মাংসের লোভে গোপনে হরিণ শিকার করছে। আবার চোরাপথে পার্শ্ববর্তী ওড়িশায় হরিণ পাচার হয়ে যাচ্ছে। জঙ্গলে নজরদারি না থাকায় হরিণের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে উঠেছে।

Advertisement

নয়াগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত বলেন, “নয়াগ্রাম ব্লকের জঙ্গলে এখনও অসংরক্ষিত ভাবে হাজার খানেক চিতল হরিণ রয়েছে। আমাদের এলাকার জঙ্গলটি ওড়িশার সীমানাবর্তী। ফলে, দুষ্টচক্রের হাতে প্রায়ই হরিণ লোপাট হয়ে যাচ্ছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন। হরিণ সংরক্ষণের জন্য এলাকার প্রাকৃতিক জঙ্গলে একটি ডিয়ার পার্ক তৈরির জন্য বনমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি।”

অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী কল্যাণী মহাকুল বলেন, “অবলা বন্যপ্রাণিটি কারও কোনও ক্ষতি না করে জঙ্গলের শোভা বাড়ায়। যেভাবে হরিণ লোপাট হচ্ছে, তাতে আগামী দিনে নয়াগ্রামের জঙ্গলে হরিণের অস্তিত্ব বিলোপ হয়ে যাবে।”

বন দফতর সূত্রের দাবি, হরিণের দ্রুত বংশবৃদ্ধি হয়। সেই কারণে নয়াগ্রামের জঙ্গলে হরিণের সংখ্যাটা গত কয়েক বছরে বেড়েছে। নয়াগ্রামের জঙ্গলটি ওড়িশার সঙ্গে লাগালাগি। ফলে, বহিরাগত লোকজন জঙ্গলপথে হরিণ ধরে নিয়ে গেলে বোঝার জো নেই। কারণ বিস্তীর্ণ গভীর জঙ্গলের ভিতর সর্বক্ষণ নজরদারি চালানো সম্ভব নয়। খড়্গপুরের ডিওফও অঞ্জন গুহর দাবি, “হরিণ সংরক্ষণের জন্য স্থানীয়স্তরে পুলিশ-প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে।” বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন বলেন, “চটজলদি তো আর ডিয়ার পার্ক তৈরি করা সম্ভব নয়। দেখছি কী করা যায়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন