পুরস্কার: পড়ুয়াদের দেওয়া হচ্ছে মশারি। —নিজস্ব চিত্র।
ডেঙ্গির ছায়া এ বার প্রাথমিক ক্রীড়াতেও। সচেতনতার বার্তা দিতে ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সফল প্রতিযোগীদের পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হল মশারি। এই উদ্যোগ মেদিনীপুর সদর গ্রামীণ চক্রের। সদর গ্রামীণ চক্রের এসআই অমরেশ কর বলছিলেন, ‘‘এখন বিভিন্ন এলাকায় মশাবাহিত রোগ দেখা দিচ্ছে। ডেঙ্গিও হচ্ছে। মশাবাহিত রোগ এড়াতে গেলে সচেতনতা খুব জরুরি। সচেতনতা বাড়াতেই সফল প্রতিযোগীদের মশারি দেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর মতে, “প্রাথমিকস্তর থেকে সচেতনতা গড়ে উঠলে সব দিক থেকে সুবিধে।”
এমন উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন সকলেই। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান নারায়ণ সাঁতরার কথায়, “খুবই ভাল উদ্যোগ। এর ফলে নিশ্চিত ভাবেই পড়ুয়াদের মধ্যে সচেতনতা বাড়বে।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরাও বলছিলেন, ‘‘এমন উদ্যোগ খুব জরুরি। জেলার প্রত্যন্ত এলাকাতেও মশাবাহিত রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়িয়ে তোলার সব রকম চেষ্টা চলছে। সচেতনতাই পারে মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধ করতে।’’
মঙ্গলবার মেদিনীপুর সদর গ্রামীণ চক্রের প্রাথমিক বিদ্যালয় সমূহের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় মেদিনীপুরে। শহরের অরবিন্দ স্টেডিয়ামে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সদর গ্রামীণ চক্রের অন্তর্গত ৯টি অঞ্চলের পড়ুয়ারা এতে যোগদান করে। এর আগে অঞ্চলস্তরে প্রতিযোগিতা হয়েছিল। অঞ্চলস্তরে যারা সফল হয়েছিল তারাই চক্রস্তরের প্রতিযোগিতায় যোগদান করে। প্রতিযোগিতা ঘিরে পড়ুয়াদের মধ্যে উত্সাহ দেখা দেয়।
তবে চমক ছিল পুরস্কারেই। প্রাথমিক ক্রীড়ায় পুরস্কার হিসেবে মশারি প্রদান এই প্রথম। মশারি পেয়ে খুশি সফল প্রতিযোগীরাও। ২০০ মিটার দৌড়ে প্রথম হয়ে মশারি পেয়েছে বৈশাখি মাণ্ডি, ১০০ মিটার দৌড়ে প্রথম হয়ে মশারি পেয়েছে পারভিন খাতুন। বৈশাখীর কথায়, ‘‘নতুন মশারি পেয়ে ভাল লাগছে। বাড়ির সবাই দেখলে নিশ্চয়ই খুশি হবে।’’ পারভিনের কথায়, ‘‘পুরস্কার হিসেবে মশারি পাওয়া এই প্রথম।’’
জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “যে সব এলাকায় মশাবাহিত রোগ বেশি হয়, সেখানে গিয়ে দেখা গিয়েছে, অনেকে মশারি ব্যবহার করেন না। এলাকার পরিবেশও পরিষ্কার নয়। সেই দিক থেকে ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় পুরস্কার হিসেবে মশারি দেওয়ার ভাবনা সত্যিই অন্য রকম।” শুধু মশারি নয়, সফল প্রতিযোগীদের গাছের চারাও দেওয়া হয়েছে। চারা পেয়েছে অন্য প্রতিযোগীরাও। সদর গ্রামীণ চক্রের এসআই অমরেশ কর বলছিলেন, “আমরা সবুজ নিয়েও সচেতনতা বাড়াতে চেয়েছি। এর ফলে গাছ সম্পর্কে পড়ুয়াদের মধ্যে সচেতনতা বাড়বে বলেই মনে হয়।”