চন্দন ষড়ঙ্গীর স্মরণসভা। জামবনির দুবড়ায়। —নিজস্ব চিত্র।
খুনের পর থেকে প্রকাশ্যে বিরোধীদের দিকেই আঙুল তুলছেন শাসকদলের নেতারা। জামবনির দুবড়ায় তৃণমূল নেতা চন্দন ষড়ঙ্গী খুনে এক সিপিএম কর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। শুক্রবার আবার বিজেপি কর্মী মিঠুন খামরুইকে গ্রেফতার করে ঝাড়গ্রাম আদালতে তুলেছে পুলিশ। তবে এ সবের মাঝেও খুনের পিছনে তৃণমূলের কোন্দল তত্ত্ব চাপা থাকছে না। এ দিন তৃণমূল আয়োজিত চন্দনের স্মরণসভায় দলীয় নেতৃত্বের বক্তব্যেও পরোক্ষে ধরা পড়েছে সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথাই।
এ দিন দুবড়া চকে তৃণমূলের অঞ্চল কার্যালয়ের সামনে চন্দনের স্মরণসভা হয়। তার আগে কালো ব্যাজ পরে ধিক্কার পদযাত্রা করেন দলের কর্মী-সমর্থকেরা। স্মরণসভায় ছিলেন তৃণমূলের যুযুধান গোষ্ঠীর নেতা ঝাড়গ্রাম জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি দেবনাথ হাঁসদা এবং তৃণমূলের এসটি সেলের জেলা সভাপতি অর্জুন হাঁসদা। তৃণমূলের জেলা নেতা চূড়ামণি মাহাতো, দুর্গেশ মল্লদেব, দলের জামবনি ব্লক সভাপতি নিশীথ মাহাতো, জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি সমীর ধল, পশ্চিম মেদিনীপুরের নেতা নির্মল ঘোষও এসেছিলেন। ছিলেন চন্দনের দাদা তৃণমূল ঝাড়গ্রাম জেলার নেতা প্রসূন ষড়ঙ্গীও।
সিপিএমের হার্মাদরা লাল জামা পাল্টে বিজেপির গেরুয়া পতাকা নিয়ে এলাকায় সন্ত্রাস করছে বলে নেতারা সকলেই অভিযোগ করেন। তবে তারই মাঝে তৃণমূলের জামবনি ব্লক সভাপতি নিশীথ বলেন, “সোমবার সন্ধ্যায় চন্দনদা কখন পার্টি অফিস থেকে বেরিয়েছিলেন, কেউ না কেউ খুনিদের কাছে খবর পৌঁছে দিয়েছিল।’’ আর প্রসূন তো সরাসরি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে আর এলাকাকে নেতৃত্ব শূন্য করতে চন্দনকে খুন করা হয়েছে।’’
এ দিন সকাল সাড়ে দশটায় স্মরণসভা শুরুর কথা থাকলেও লোকজন জুটতে বেলা ১২টা বেজে যায়।
থমথমে দুবড়া চকে কিছু দোকানপাট খোলা থাকলেও লোকের থেকে পুলিশের সংখ্যাই ছিল বেশি। তৃণমূলের এসটি সেলের জেলা সভাপতি অর্জুন হাঁসদা বলেও ফেলেন, “প্রতিবাদের পাশাপাশি, কীভাবে নিজেরা বাঁচব, সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।’’
তবে চন্দনের স্মরণসভায় জেলা কোর কমিটির চেয়ারম্যান সুকুমার হাঁসদা আসেননি। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের আঁচ থেকে বাঁচতেই কি এই গরহাজিরা? সুকুমারের অবশ্য দাবি, “আমি অসুস্থ। কলকাতায় এসেছি। আর ওই কর্মসূচি সফল করার জন্য নেতা-কর্মীদের বলেছি।’’
এ দিকে, তদন্ত খুনে ধৃত বিজেপি কর্মী মিঠুনকে ৬ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে ঝাড়গ্রাম আদালত। মিঠুনের বাড়ি জামবনির বেলিয়া গ্রামে। এ বার জামবনি পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে বিজেপির টিকিটে জিতেছেন মিঠুন। বিজেপি-র অভিযোগ, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে তাঁকে।