Murder

জুয়ার টাকা নিয়েই কি বচসা! জোড়া খুন করে সটান থানায়

স্থানীয় সূত্রে খবর, বিমলদের নামে ছিনতাই, তোলাবাজির মতো অসামাজিক কাজকর্মের অভিযোগ রয়েছে। ফুলের ব্যবসার আড়ালে ওই দোকানে অনলাইন জুয়া চলত বলেও অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:৪৪
Share:

ধৃত বিমল নায়েক (উপরে)। নিহত রাজেশের মা তুলিকা (নীচে)। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

শনিবার সকাল। মেদিনীপুর কোতোয়ালি থানায় এসে এক যুবক জানাল, ‘দু’জনকে খুন করে ফেলেছি।’ শুনে চমকে ওঠেন ডিউটি অফিসার। ওই যুবকের কথা মতো খাসজঙ্গলে গিয়ে পুলিশ দেখে, পড়ে রয়েছে দু’জনের রক্তাক্ত দেহ। বিমল নায়েক ওরফে বাপ্পা নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মদের আসরে বচসা থেকেই খুন হয়েছেন রাজেশ দাস (২৭) এবং তন্ময় মল্লিক (৫৪)। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে দু’জনকে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘তদন্তে সবদিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, বছর সাতাশের বিমলের বাড়ি আবাসের অদূরে আজাদনগরে। রাজেশ কেরানিচটির বাড়ুয়ার বাসিন্দা ছিলেন। আর তন্ময় শহরের কালীতেলিরচকে এক ভাড়া বাড়িতে থাকতেন। আবাসের অদূরে খাসজঙ্গলে রাজেশের ফুলের দোকান ছিল। তন্ময় এবং বিমলও ফুলের কাজ করতেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, শুক্রবার রাতে ওই দোকানে মদের আসর বসেছিল। সেখানে কিছু একটা বিষয় নিয়ে বচসা হয়েছে। তার থেকেই এই জোড়া খুন। ওই দোকানেই এ দিন জোড়া দেহ উদ্ধার হয়। দোকানটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। এক তদন্তকারী বলেন, ‘‘আসরে ওই তিনজনই ছিল, না আরও কেউ ছিল, তদন্তে তা দেখা হচ্ছে।’’ কী নিয়ে বচসা হয়েছে তাও স্পষ্ট নয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতকে আদালতে হাজির করে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হবে। খুনের কারণ জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারেরও চেষ্টা করা হবে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, বিমলদের নামে ছিনতাই, তোলাবাজির মতো অসামাজিক কাজকর্মের অভিযোগ রয়েছে। ফুলের ব্যবসার আড়ালে ওই দোকানে অনলাইন জুয়া চলত বলেও অভিযোগ। মৃত রাজেশের মা তুলিকা দাসও মানছেন, ‘‘ওর ওই ঘরে কম্পিউটার ছিল। লকডাউনের সময়ে জুয়া খেলা হত বলে শুনেছি। জুয়া খেলা নিয়ে গন্ডগোলের জন্যই কিছু হল কি না বুঝতে পারছি না।’’ জানা যাচ্ছে, শুক্রবার সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন রাজেশ। আর ফেরেননি। দুপুরে ফোনে বাড়িতে জানিয়েছিলেন, তিনি কেরানিতলায় এক জায়গায় খেয়ে নিয়েছেন। শুক্রবার সকালে বাড়ি থেকে বেরনোর সময়ে ব্যাঙ্কের পাশবই নিয়েছিলেন রাজেশ। বাড়িতে তিনি জানিয়েছিলেন, ব্যাঙ্কে টাকা রাখতে যাচ্ছেন। জুয়ার টাকা বা ছিনতাই-তোলাবাজির টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বচসা হয়েছিল কি না দেখছে পুলিশ।

Advertisement

কিন্তু একজনের পক্ষে দু’জনকে কুপিয়ে খুন সম্ভব হল কী করে? কেন বাধা দিলেন না তন্ময়রা? পুলিশের একাংশের অনুমান, তন্ময়রা এতটাই মদ্যপ ছিলেন যে বাধা দেওয়ার অবস্থায় ছিলেন না।তদন্তে নেমে আরও একাধিক যুবকের খোঁজ করছে পুলিশ। এরমধ্যে কেরানিচটির এক যুবক, তোলাপাড়ার এক যুবক রয়েছেন। তবে বিমল যখন থানায় আত্মসমর্পণ করেন, তাঁর হাতে রক্তের দাগ ছিল না। ঘটনার পর থেকে ওই যুবক কোথায় ছিলেন, কারও আশ্রয়ে ছিলেন কি না, সব খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন