পিকনিকের নয়া ঠিকানা বালুঘাটার ‘পাখি চড়া’

পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার রেঞ্জের অধীন বালুঘাটা অরণ্য খাতায় কলমে ১৮০ হেক্টরের কাছাকাছি এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। হলদি নদীর পাশে এখানে রয়েছে কয়েক লক্ষ ঝাউ আর ম্যানগ্রোভ গাছ। পূর্ব মেদিনীপুর তো বটেই, শীতের মরসুমে পার্শ্ববর্তী জেলা থেকেও বালুঘাটায় হাজার হাজার পর্যটক আসেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হলদিয়া শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৫৫
Share:

শীতে বালুঘাটায় ভিড় করেন পর্যটকেরা। নিজস্ব চিত্র

আমজনতার কাছে হলদিয়ার বালুঘাটা পর্যটনের একটি জনপ্রিয় এলাকা। এই বালুঘাটাতেই রয়েছে ‘পাখি চড়া’। সন্ধ্যা নামলেই ওই এলাকার গাছগাছালিতে হাজার হাজার পাখি বাসায় ফেরে। আর দৃশ্য এবং পাখিদের কলকাকলি উপভোগ করতে ভিড় জমান বহু মানুষ। বর্তমানে এই ‘পাখি চড়া’তেই নতুন করে বনসৃজন করছে বন দফতর। শীতেরক মরসুমে ওই এলাকা হয়ে উঠেছে পিকনিকের নতুন ঠিকানা।

Advertisement

পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমার রেঞ্জের অধীন বালুঘাটা অরণ্য খাতায় কলমে ১৮০ হেক্টরের কাছাকাছি এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। হলদি নদীর পাশে এখানে রয়েছে কয়েক লক্ষ ঝাউ আর ম্যানগ্রোভ গাছ। পূর্ব মেদিনীপুর তো বটেই, শীতের মরসুমে পার্শ্ববর্তী জেলা থেকেও বালুঘাটায় হাজার হাজার পর্যটক আসেন। সাধারণত বালুঘাটার ‘সানসেট ভিউ পয়েন্টে’ই তাঁরা ভিড় করেন। তবে হলদিয়া পুরসভার আশা, এবছর ওই ভিউ পয়েন্টের পাশে থাকা ‘পাখি চড়া’তেও পর্যটকদের ভিড় জমবে। ওই জায়গাটি তার দিয়ে ঘেরা হয়েছে। কড়া পাহারাও রয়েছে। বেড়াতে আসা মানুষেরা বাসায় ফেরা পাখিদের যাতে বিরক্ত না করেন, সে জন্য ওই ব্যবস্থা। এছাড়া, ‘পাখি চড়া’তেই বর্তমানে লাগানো হয়েছে নতুন করে কয়েক হাজার ঝাউ গাছ।

হলদিয়া পুরসভা সূত্রের খবর, এবারের পুর বাজেটে পর্যটন ক্ষেত্রে এই বালুঘাটার জন্য ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। পুরভার চেয়ারম্যান শ্যামল আদক বলেন, ‘‘বালুঘাটার সৌন্দর্যকে কাজে লাগানো হবে। চুনামারা খাল, যা বালুঘাটার মধ্যে হলদি নদীর সংযোগ স্থাপন করছে, সেটি সংস্কার করা হবে। ওই খালে হবে বোটিং। এর সাথে বালুঘাটায় হবে ‘রোপওয়ে’। এর মাধ্যমে জঙ্গলের কয়েক কিলোমিটার ঘুরিয়ে দেখানো হবে। শুধু তাই নয় রাত্রি যাপনের জন্য বানানো হচ্ছে আধুনিক তাঁবু।’’

Advertisement

সম্প্রতি ‘সানসেট ভিউ পয়েন্টে’ গিয়ে দেখা গিয়েছে, এলাকায় নতুন করে কাজ চলছে। গ্যালারি সংস্কার করা হচ্ছে। এসেছে তাঁবু। সপ্তাহ খানেক আগেই চেয়ারম্যান শ্যামল আদক এবং দফতেরের ইঞ্জিনিয়ারেরা এলাকাটি ঘুরে দেখেন। ‘সানসেট ভিউ পয়েন্ট’ থেকে সূর্যাস্ত দেখা যায় না বলে অনেতে অভিযোগ করেন। তাই ভিউ পয়েন্ট থেকে নদীর কিনারা পর্যন্ত যাওয়ার জন্য এবার রাস্তাও তৈরি করা হচ্ছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।

পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল (উন্নয়ন) নারায়ণ প্রামাণিক বলেন, ‘‘পানীয় জল, শৌচালয় আগে থেকেই ছিল। পিকনিক করতে আসা মানুষদের কথা ভেবে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা-সহ রাস্তা চওড়া করা হচ্ছে। গ্যালারি সংস্কার করা হচ্ছে। আগামিদিনে ওই গ্যালারি পরিবর্তে করে রাত্রিবাসের জন্য অতিথিশালা করা হবে।’’

তবে পিকনিক দলের ভিড় বাড়ায় এলাকার পরিবেশ দূষণ নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁদের বক্তব্য, পিকনিকের পরে থার্মোকলের থালা, প্লাস্টিক পড়ে থেকে বিস্তীর্ণ এলাকা নোংরা হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের নজর দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন