নিসর্গ: জঙ্গলের ভিতর নতুন ভবনের উদ্বোধন। নিজস্ব চিত্র
আরও একটি নাম জুড়ল ঝাড়গ্রাম জেলার পর্যটন কেন্দ্রের তালিকায়। শীতের শুরুতেই লোধাশুলির শালজঙ্গলের মাঝে চালু হচ্ছে একটি ঝাঁ চকচকে তিনতলা প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র। শুক্রবার দুপুরে কেন্দ্রটির উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গ বন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান তথা দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ।
রগড়া যাওয়ার পিচ রাস্তার ধারে লোধাশুলিতে ১৫ হেক্টর এলাকা জুড়ে রয়েছে বন উন্নয়ন নিগমের কাঠের ডিপো। চার দিকে অজস্র শালগাছের ঘেরা ওই ডিপো-চত্বরের মাঝে দেড় হেক্টর জায়গায় ৮০ লক্ষ টাকা খরচ করে তৈরি হয়েছে প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র। তিন তলা কেন্দ্রের প্রত্যেক তলায় দু’টি করে মোট ছ’টি বিলাসবহুল বাতানুকূল ঘর রয়েছে। সঙ্গে ব্যালকনি। সেখান থেকেই দেখা যাবে শালের জঙ্গল। এখানে বসে পাখির ডাকও উপভোগ করা যাবে।
কলকাতা থেকে সড়ক পথে সহজেই পৌঁছনো যায় লোধাশুলিতে। ঝাড়গ্রাম শহর কেন্দ্রটির দূরত্ব মাত্র ১৫ কিলোমিটার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নিগমের এমডি সুব্রত ডাণ্ডিয়াল, নিগমের জেনারেল ম্যানেজার বিনোদকুমার সুদ, নিগমের মেদিনীপুরের ডিভিশনাল ম্যানেজার সত্যজিৎ রায়, লোধাশুলি ডিপোর রেঞ্জ ম্যানেজার নিখিলরঞ্জন মণ্ডল প্রমুখ।
জঙ্গলমহলের পর্যটনকে তুলে ধরতে আগ্রহী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারে বারেই ঝাড়গ্রামকে কেন্দ্র করে ‘ট্যুরিজম সার্কিট’ গড়ে তোলার কথা বলেন। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে ঝাড়গ্রাম শহরের উপকণ্ঠে বাঁদরভুলায় বন উন্নয়ন নিগমের ঝাড়গ্রাম প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র চালু হয়। সেখানে তিনটি কটেজের ছ’টি ঘরে ১২ জন থাকতে পারেন। লোধাশুলিতে নিগমের কেন্দ্রটির ছ’টি ঘরেও থাকবে পারবেন ১২ জন। এই নিয়ে নিগমের দু’টি প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র পেল জেলা। ২০০৪ সালের হানায় বেলপাহাড়ির কাঁকড়াঝোরে দু’টি বন বাংলো ধ্বংস করে দিয়েছিল মাওবাদীরা। তার পর থেকে কাঁকড়াঝোর ও সংলগ্ন এলাকায় পর্যটকদের থাকার কোনও ব্যবস্থা নেই।
এ প্রসঙ্গে উদয়নবাবু জানান, উত্তরবঙ্গের আন্দোলনেও বেশ কিছু বন বাংলো ধ্বংস হয়েছিল। সেগুলিকে নিগমের উদ্যোগে নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, “বেলপাহাড়িতেও প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র তৈরির ভাবনাচিন্তা রয়েছে। কাঁকড়াঝোর ছাড়াও বেলপাহাড়ির যে সব এলাকায় পর্যটকরা যান, সেখানে জঙ্গলের বাইরে জমি পাওয়া গেলে অবশ্যই প্রকৃতি পর্যটন করা হবে। লাভজনক না হলেও পর্যটকদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য পর্যটন কেন্দ্র করা হবে।” তবে জঙ্গলের ভিতরে কোনও নির্মাণ করা যাবে না বলে জানান উদয়নবাবু। তবে জঙ্গলের বাইরে জমি পাওয়া গেলে আরও একাধিক প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র গড়তে নিগম আগ্রহী। জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের তাজপুরেও একটি প্রকৃতি পর্যটন করা হচ্ছে। সত্যজিৎবাবুর কথায়, “কিছু দিনের মধ্যেই নিগমের ওয়েবসাইট থেকে পর্যটকেরা অনলাইনে ঘর বুকিং করতে পারবেন।”