জানলা কেটে হোমছুট নয়

দাসপুরের হোমটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিচালিত জুভেলাইন হোম। এখানে মূলত রেলওয়ে স্টেশন বা রাস্তায় উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘোরাফেরা করা শিশুদের উদ্ধার করেই রাখা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দাসপুর শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৮ ০১:৪৯
Share:

হোমের জানলার রড কেটে পালায় কিশোরেরা। নিজস্ব চিত্র

ফের হোম থেকে চম্পট দিল আবাসিক নয় কিশোর। মাসখানেক আগে দাসপুর থানার উত্তরবাড় সংলগ্ন বেনাইয়ের ওই হোমের শৌচাগারের ঘুলঘুলি দিয়ে পালিয়েছিল তিন জন আবাসিক। তাদের মধ্যে এখনও এক জন নিখোঁজ। মঙ্গলবার রাতে সমাজকল্যাণ দফতর অনুমোদিত মাস পাঁচেকের পুরনো এই হোমের জানলার রড কেটে পালাল ন’জন আবাসিক।

Advertisement

গত ফেব্রুয়ারি মাসে দাসপুর-২ ব্লকের উত্তরবাড়ে হোম চালু হয়। অভিযোগ, মঙ্গলবার রাতে হোমের দোতলায় জানালার রড কেটে এক সঙ্গে ন’জন এক এক করে বাইরে বেরিয়ে আসে। সেখান থেকে হোমের পিছন দিয়ে তারা চম্পট দেয়। বুধবার ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ ঘটনাটি নজরে আসে হোম কর্তৃপক্ষের। তারপরই বিষয়টি পুলিশে জানানো হয়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে হাজির হয় পুলিশ। যান ঘাটালের মহকুমা পুলিশ অফিসার কল্যাণ সরকারও। যদিও এখনও পর্যন্ত নিখোঁজদের সন্ধান মেলেনি।

সমাজকল্যাণ দফতর সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর মোট পাঁচটি হোম রয়েছে। এর মধ্যে মেদিনীপুর শহরের হোমটি পুরোপুরি সরকার নিয়ন্ত্রিত। বাকিগুলি সমাজকল্যাণ দফতরের অনুমতি নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে চলে। দাসপুরের হোমটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিচালিত জুভেলাইন হোম। এখানে মূলত রেলওয়ে স্টেশন বা রাস্তায় উদ্দেশ্যহীন ভাবে ঘোরাফেরা করা শিশুদের উদ্ধার করেই রাখা হয়। ছয় থেকে আঠারো বয়সী ছেলেরাই থাকে। জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির মাধ্যমে হোমগুলিতে আবাসিকেরা আসে। হোমে থাকাকালীন আবাসিকদের যাবতীয় দায়িত্বই সংশ্লিষ্ট হোম কর্তৃপক্ষের। তাদের থাকা-খাওয়া সহ কাউন্সেলিং করারও কথা। খেলাধুলো বা পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক আবাসিক দের স্কুলে পড়ার ব্যবস্থাও করতে হবে। নিরাপত্তার দিকটিও হোম কর্তৃপক্ষকেই দেখতে হবে।

Advertisement

দাসপুরের বেনাই সংলগ্ন উত্তড়বাড়ের ওই হোম কর্তৃপক্ষের দাবি, মঙ্গলবার রাতে খাওয়ার-দাওয়া করে ন’জন আবাসিক দোতলার শোওয়ার ঘরে চলে যায়। হোমটিতে মোট ৩৬ জন আবাসিক রয়েছে। এদের মধ্যে ন’জনের বয়স আঠারোর কাছাকাছি। মাস খানেক আগেই ওরা এখানে এসেছিল। অপেক্ষাকৃত বয়সে বড় তাই এই ন’জনই একসঙ্গে থাকত। পুলিশের অনুমান, পুরো ঘটনাটি পরিকল্পিত ছিল। রাতে জানলার রড কেটে বাইরে বেরিয়ে যায়।

হোমের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক কর্তা শ্যামসুন্দর কোলে বলেন, “আমরা থানায় এফআইআর করেছি। সমাজকল্যাণ দফতরকেও জানানো হয়েছে। হোমে নিরাপত্তার কোনও ত্রুটি নেই।” এ নিয়ে এডিএম (পঞ্চায়েত) প্রতিমা দাস বলেন, ‘‘ওই হোমে সমাজকল্যাণ দফতরের আধিকারিকদের পাঠানো হয়েছে। হোম কর্তৃপক্ষকে শো-কজ করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন