খড়্গপুরের নেতাদের সতর্কবার্তা শুনিয়ে গেলেন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভানেত্রী তথা সাংসদ দোলা সেন। বুধবার সন্ধ্যায় মেদিনীপুরে এসেছিলেন তিনি। বিদ্যাসাগর হলে আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত ‘অল বেঙ্গল সিকিউরিটি অ্যান্ড অ্যালাইড ওয়ার্কমেনস ইউনিয়ন’- এর বৈঠকের পরে সন্ধ্যায় পৃথক ভাবে খড়্গপুরের শ্রমিক নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন দোলা। সংগঠন সূত্রে দাবি, সেখানে দোলার বার্তা— কাজ বন্ধ রেখে ঘেরাও-বিক্ষোভ চলবে না। দল সকলের উপর নজর রাখছে। কারও চাকরি পাকা নয়। ফাউল করলে কার্ড দেখতে হবে বলে দোলা হুঁশিয়ারি দেন বলেও ওই সূত্রের দাবি।
তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলে দিন কয়েক আগে খড়্গপুরের এক কারখানায় বেশ কিছুক্ষণের জন্য কাজ বন্ধ ছিল। তাতে শিল্পমহলে নেতিবাচক বার্তা পৌঁছয়। সেই প্রেক্ষিতেই দোলার এই হুঁশিয়ারি বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। বুধবারের ওই বৈঠকে খড়্গপুরের নেতা জহরলাল পাল, দেবাশিস চৌধুরী, শক্তি মণ্ডলরা হাজির ছিলেন। ছিলেন আইএনটিটিইউসির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি দীনেন রায়। দীনেনবাবু বলেন, “খড়্গপুরের ব্যাপারে কিছু আলোচনা হয়েছে।” তৃণমূলের খড়্গপুর শহর সভাপতি দেবাশিস চৌধুরীও মেনেছেন, “দোলা সেন বলেছেন, সর্বত্র দলের একটি ইউনিয়ন থাকবে। কোথাও কারখানা বন্ধ করা যাবে না। কারন বন্ধ করে শ্রমিক স্বার্থ রক্ষা সম্ভব নয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে স্থানীয় কয়েকটি ক্ষেত্রে শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত। তবে সেখানে বন্ধ করতে হয়নি। ত্রিপাক্ষিক আলোচনাতেই সমাধান হয়েছে।”
খড়্গপুরের কারখানায় অশান্তির পরেই অবশ্য নড়ে বসেছিলেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। ভাবমূর্তি বজায় রাখতে তড়িঘড়ি বৈঠক হয়। নেতৃত্ব জানিয়ে দেন, কারখানায় কোনও রকম অশান্তি চলবে না। দোলাও সেই সূত্রেই সতর্ক করেছেন খড়্গপুরের নেতাদের। সেই সঙ্গে বিধানসভা ভোটে খড়্গপুরে হারের পিছনে যে সাংগঠনিক দুর্বলতাও দায়ী, বৈঠকে তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন আইএনটিটিইউসির রাজ্য সভানেত্রী। এ বার খড়্গপুরে জিতেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
শুধু খড়্গপুর শিল্পাঞ্চলের কারখানা নয়, খড়্গপুর আইআইটি- তেও কাজ নিয়ে এই সময়ের মধ্যে একাধিকবার শ্রমিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। একাধিক ঘটনায় নাম জড়িয়েছে আইএনটিটিইউসির। সংগঠনের এক সূত্রে খবর, ঘরোয়া বৈঠকে দোলা বার্তা দিয়েছেন, শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে। এটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিক্ষা। ধর্মঘট, বন্ধ, অবরোধ, ঘেরাও চলবে না বলে জানিয়ে দেন তিনি।