এ ভাবেই যাত্রীদের যাতায়াত করতে হয়। — নিজস্ব চিত্র।
প্ল্যাটফর্মের কাজ শেষ হয়নি। চালু হয়নি ফুটব্রিজও। তার আগেই চালু হয়ে গিয়েছে অসমাপ্ত প্ল্যাটফর্ম। কাজ শেষ হওয়ার আগেই নতুন প্ল্যাটফর্মে থামছে ট্রেন। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। খড়্গপুর-আদ্রা শাখার গোদাপিয়াশাল স্টেশনের ছবিটা এখন এমনই।
গোদাপিয়াশাল স্টেশনের অদূরেই রয়েছে সিমেন্ট কারখানা। স্টেশন থেকে জিন্দলদের প্রকল্প এলাকার দূরত্বও বেশি নয়। গোদাপিয়াশাল, বেঁউচা, গুরাইপাটনা, শৌলা, হাতিমারি, গোবরু-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ এই স্টেশন দিয়ে যাতায়াত করেন। আপ ও ডাউন মিলিয়ে দিনে বারোটি ট্রেন থামে এই স্টেশনে। চারটি লাইন থাকলেও প্ল্যাটফর্ম রয়েছে দু’টি। তাই নতুন প্ল্যাটফর্মের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন প্ল্যাটফর্ম ও ফুটব্রিজ তৈরি করে দিচ্ছে স্থানীয় সিমেন্ট প্রস্তুতকারক সংস্থাটি। বিনিময়ে কারখানা পর্যন্ত কাঁচামালের রেক পৌঁছে দেওয়ার জন্য রেল তাদের সাহায্য করবে। বর্তমানে ওই সংস্থার কাঁচামাল লরিতে আসে। ফলে পরিবহণ খরচ অনেক বেশি। রেকে কাঁচামাল আনলে খরচ কম পড়বে।
উড়ালপুল চালু না হওয়ায় যাত্রীদের তিনটি লাইন পেরিয়ে নতুন প্লাটফর্মে যেতে হচ্ছে। নতুন প্ল্যাটফর্ম উঁচু হওয়ায় অস্থায়ী সিঁড়ি লাগানো হয়েছে। যদিও ট্রেন এলেই সিঁড়ি তুলে নিতে হয়। ট্রেন চলে গেলে ফের সিঁড়ি রেখে দেওয়া হয়। কিন্তু সেই সিঁড়ি দিয়ে সকলের পক্ষে ওঠা নামা সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে তাঁদের প্রায় ৫০০ মিটার ঘুরে গিয়ে নতুন প্লাটফর্মে উঠতে হয়। স্টেশনে পৌঁছতে দেরি হলে টিকিট কেটে অতটা ঘুরে ট্রেনে ওঠা সম্ভবও নয়। টিকিট কাটতে দেরি হওয়ায় অনেকের ট্রেনও ‘মিস’ হয়ে যাচ্ছে।
বেঁউচা গ্রামের বাসিন্দা সৌমেন সামন্ত বলেন, “নতুন প্ল্যাটফর্ম জরুরি। কিন্তু সেখানে ট্রেন থামানোর আগে ফুটব্রিজ তৈরির কাজ শেষ করা উচিত ছিল।” ষাটোর্ধ্ব রবীন্দ্রনাথ যাশুর কথায়, “আমার মতো বৃদ্ধের পক্ষে ওই ছোট সিঁড়ি দিয়ে ওঠা অসম্ভব। পড়ে গিয়ে কী পা ভাঙব না কি। তাই ঘুরপথে অনেকটা হেঁটেই যেতে হয়।” স্টেশন ম্যানেজার জানিয়েছেন, দ্রুত গতিতে ফুটব্রিজ ও প্ল্যাটফর্ম তৈরির উপর জোর দেওয়া হয়েছে। আরও ট্রেন থামানোর দাবিও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।