সঙ্কটে থাকা শ্রী রেণুকা সুগারসের চিনিকল নিয়ে বৈঠকে বসলেন হলদিয়ার উপ-শ্রম কমিশনার। সোমবারের এই বৈঠকে ঠিকাদার ও শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না মালিকপক্ষের কেউ। ফলে জট কাটেনি।
এ দিন দুপুরে হলদিয়ায় উপ-শ্রম কমিশনারের অফিসে ওই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। শ্রম দফতর সূত্রে খবর, মালিকপক্ষ এ দিন চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন যে সব কর্মীকে নিয়ে সমস্যা তাঁরা ঠিকা সংস্থার অধীন। ফলে ঠিকাদার ও ঠিকাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করবেন। এ ক্ষেত্রে কারখানা কর্তৃপক্ষের কিছু করার নেই। ভবিষ্যতে এই সমস্যা নিয়ে বৈঠকে যাতে তাদের ডাকা না হয়, সেই অনুরোধও জানিয়েছেন মালিকপক্ষ।
দীর্ঘ দিন সঙ্কটে থাকা চিনিকলটির কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি বিভিন্ন ঠিকাদার সংস্থাকে যন্ত্রপাতি সরিয়ে নিতে বলেছেন। ১ এপ্রিলের মধ্যে সরাতে বলা হয়েছে ঠিকাকর্মীদেরও। ফলে প্রায় ৩০০ ঠিকাশ্রমিক কাজ হারাতে পারেন বলে আশঙ্কা। এই পরিস্থিতিতে সঙ্কট কাটাতে চিনিকলে সিটুর শ্রমিক ইউনিয়ন এবং আইএনটিটিইউসি-র শ্রমিক ইউনিয়ন হলদিয়ার উপ-শ্রম কমিশনারকে চিঠি দিয়েছিলেন। তার প্রেক্ষিতেই এ দিনের বৈঠক ডাকা হয়।
বৈঠকে মালিকপক্ষ অনুপস্থিত থাকায় সিটু এবং আইএনটিটিইউসি নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ। সিটুর হলদিয়া রিজিওনাল কমিটির সাধারণ সম্পাদক দেবেশ আদক, সিটুর রেণুকা সুগার ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল রহমাদের অভিযোগ, ‘‘আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করে মালিকপক্ষ ঠিকাদার সংস্থাগুলির মাধ্যমে কর্মী ছাঁটাইয়ের চেষ্টা করছেন। এর প্রতিবাদে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করব। আমরা বলেছি, কর্মী ছাঁটাই করা চলবে না। মালিকপক্ষকেও আলোচনায় বসতে হবে।’’ রেণুকা সুগারের আইএনটিটিইউসির শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি প্রবীর মাইতিরও আশঙ্কা, ‘‘মালিকপক্ষ কর্মী ছাঁটাইয়ের চেষ্টা করছে। আমরা পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছি।’’
হলদিয়ার উপ-শ্রম কমিশনার মিহির সরকার এ দিন বলেন, ‘‘কারখানা কর্তৃপক্ষ কী করতে চাইছেন তা আমাদের কাছেও পরিষ্কার নয়। তাই ঠিকাদার সংস্থার আধিকারিকদের বলা হয়েছে মালিকপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে আমাদের জানান। ঠিকাদার সংস্থার রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই শ্রমদফতর পরবর্তী পদক্ষেপ করবে।’’
কারখানা কর্তৃপক্ষ অবশ্য আগেই জানিয়েছেন, ৩১ মার্চ ঠিকাদার সংস্থাগুলির সঙ্গে তাঁদের চুক্তির মেয়াদ ফুরোচ্ছে। কারখানা সঙ্কটে থাকায় চুক্তির পুনর্নবীকরণ করা হবে না। তাই ঠিকাকর্মীদের কাজে পাঠাতে নিষেধ করা হয়েছে। কারখানার পরিস্থিতি ভাল হলে পরে ফের চুক্তি করা হবে।”