রক্ষী-হীন মহিলা কামরা 

এই ঘটনা ফের বেআব্রু করে দিয়েছে ট্রেনে মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়টি।

Advertisement

দিগন্ত মান্না

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:১১
Share:

—ফাইল চিত্র।

ক’দিন আগেই সন্ধ্যায় হাওড়াগামী পাঁশকুড়া লোকালের মহিলা কামরায় মোবাইল ছিনতাই হয়েছিল নন্দকুমারের বিএলআরও সংযুক্তা পালের। বাধা দিতে গিয়ে হেনস্থা হতে হয় ওই মহিলা আধিকারিককে। প্ল্যাটফর্মে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয় তাঁকে। অজ্ঞান হয়ে পড়েন সংযুক্তা।

Advertisement

এই ঘটনা ফের বেআব্রু করে দিয়েছে ট্রেনে মহিলাদের নিরাপত্তার বিষয়টি। শুধু মহিলারা কেন? মাস কয়েক আগে কোলাঘাটে চলন্ত ট্রেনে বসা নিয়ে বচসার জেরে আক্রান্ত হয়েছিলেন কয়েকজন পুরুষ যাত্রীও। পরপর এই ধরনের ঘটনায় রেলের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রেলযাত্রীরা। ব্যর্থতার কথা স্বীকার করেও রেলের সাফাই— সব সময় ষোলোআনা নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়।

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়গপুর শাখায় লোকাল ট্রেনের মহিলা কামরাগুলিতে নিরাপত্তার জন্য রেলের রয়েছে তেজস্বিনী বাহিনী। এই বাহিনীর একটা দল খড়গপুর থেকে মেচেদা পর্যন্ত দায়িত্ব সামালায়। অন্য দলটি হাওড়া থেকে মেচেদা পর্যন্ত লোকাল ট্রেনের মহিলা কামরার নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। রেল সূত্রে খবর, ব্যস্ত সময়ে লোকাল ট্রেনের মহিলা কামরার দায়িত্বে থাকে এই বাহিনী। আর রাতের শেষ ট্রেনে মহিলা কামরার নিরাপত্তার দায়িত্ব বর্তায় নির্দিষ্ট কিছু স্টেশনের আরপিএফএ বাহিনীর উপর।

Advertisement

কিন্তু সাধারণত ব্যস্ত সময়ে তো মহিলা কামরায় দুষ্কর্ম হয় না? হয় মহিলা কামরায় যাত্রী যখন কম থাকে তখনই। অভিযোগ, সব সময় মহিলা কামরায় নিরাপত্তা আয়োজন থাকে না।

সে দিন সন্ধ্যায় যখন নন্দকুমারের মহিলা বিএলআরও-র মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনাটি ঘটে তখনও ট্রেনের ওই মহিলা কামরায় যাত্রী সংখ্যা ছিল কম। সেই সুযোগেই দুষ্কৃতী তাঁর মোবাইলটি ছিনতাই করে বলে অভিযোগ আক্রান্ত ওই আধিকারিকের। পাঁশকুড়ার বাসিন্দা কল্যাণ রায় বলছিলেন, ‘‘আমি রেলের একজন নিত্যযাত্রী। অফিসে যাতায়াতের সময় বেশ কিছু লোকাল ট্রেনের মহিলা কামরায় নিরাপত্তারক্ষী থাকলেও সব ট্রেনে থাকে না। অফিস সময় বাদ দিলে অন্য সময় ট্রেনের মহিলা কামরায় কোনও নিরাপত্তারক্ষী থাকে না। রেলের উচিত সব ট্রেনের মহিলা কামরায় দিনভর অন্তত একজন করে নিরাপত্তা রক্ষীর ব্যবস্থা করা।’’ পাঁশকুড়ার বাসিন্দা অঞ্জনা মান্নার কথায়, ‘‘প্রায়ই ট্রেনে হাওড়া যাতায়াত করি। সন্ধের সময় মহিলা কামরায় কোন নিরাপত্তারক্ষীকে দেখা যায় না। যখন যাত্রী কম থাকে খুব ভয় হয়।’’

রেলের যুক্তি, তাদের হাতে এত সংখ্য নিরাপত্তা কর্মী নেই যে সব ট্রেনে মোতায়েন করা যাবে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষের কথায়, ‘‘আমাদের তেজস্বিনী বাহিনী খুব ব্যস্ত সময়গুলিতে মহিলা কামরার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন।’’

দিন দিন বাড়ছে চলন্ত ট্রেনে অপরাধের ঘটনা। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অধরা থেকে যায় দুষ্কৃতীরা। রেলের ভাড়া বাড়ছে। কিন্তু নিরাপত্তা কোথায়? বিশেষ করে মহিলা কামরার? প্রশ্নের সদুত্তর নেই

রেলের কাছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন