পুরসভাগুলিকে আর্জি স্বাস্থ্য দফতরের

শুধু মশা দমনই নয়, নজর চাই জলদূষণেও

মশাবাহিত রোগের পাশাপাশি জলবাহিত অসুখ ঠেকাতেও উদ্যোগী হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতর। পানীয় জলের উৎসগুলিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ও নিয়ম করে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানোর জন্য ইতিমধ্যেই পুরসভাগুলির কাছে আর্জি জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৭ ০২:২১
Share:

দূষণ: ট্যাপকলের চারপাশ ঢেকেছে আগাছায়। নিজস্ব চিত্র

মশাবাহিত রোগের পাশাপাশি জলবাহিত অসুখ ঠেকাতেও উদ্যোগী হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দফতর। পানীয় জলের উৎসগুলিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ও নিয়ম করে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানোর জন্য ইতিমধ্যেই পুরসভাগুলির কাছে আর্জি জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। পাশাপাশি এই নিয়ে প্রচারও শুরু করেছে স্বাস্থ্য ভবন।

Advertisement

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা বলেন, “এই সময় জল থেকেও নানা রোগ ছড়ায়। তাই পুরসভাগুলিকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। সাধারন মানুষকেও সচেতন করতে প্রচারে জোর দেওয়া হচ্ছে।”

জেলা স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, মশা মারতে নালা-নদর্মা সংস্কার যেমন জরুরি। তেমনই নলকূপ, জলের ট্যাপগুলিকেও পরিষ্কার করা প্রয়োজন। তা না হলে জলেও জীবাণু বাসা বাঁধবে। ছড়াবে দূষণ। জল থেকে পেটের নানা অসুখ যেমন ছড়ায়, তেমনই এনসেফ্যালাইটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনাও থাকে। জল দূষণের জন্য টাইফয়েড, জন্ডিসেও আক্রান্ত হন অনেকে।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, নলকূপের দশ মিটারের ভিতর কোনও গর্ত বা জঞ্জালের স্তূপ থাকলে তা সরিয়ে নিতে হবে। গর্তগুলিও বুজিয়ে ফেলা দরকার। অন্যদিকে নলকূপের পাশাপাশি শৌচালয়, ট্যাপ কলের চাতালে ফাটল বা নিকাশি নালা থাকলে হয় নিয়ম করে তা পরিষ্কার করা প্রয়োজন। দরকারে নলকূপ অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া উচিত। অভিযোগ, পুরসভার উদাসীনতায় রাস্তার ধারে বা পাড়ার ভিতর ট্যাপকলগুলির পাশে জঞ্জাল পড়ে থাকতে দেখা যায়। এমন ঘটনা নিয়ে উদ্বিগ্ন জেলা স্বাস্থ্য দফতর। তাই জলের জীবাণু ধ্বংস করতে জলের উৎসগুলিকে নিয়ম করে পরিষ্কার করার আর্জি জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য দফতরের বিশেষজ্ঞরা। সেই সঙ্গে নিয়ম করে জল পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে বলেছে স্বাস্থ্য দফতর।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরিশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘পুরসভা ও পঞ্চায়েতগুলিকে জল পরীক্ষা করার আর্জি জানানো হয়েছে। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকেও সাহায্য করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” শুধু আর্জি জানানোই নয়, সহকারি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নেতৃত্বে একটি টিম জেলা জুড়ে নজরদারিও শুরু করেছে। সাধারণ মানুষকেও সচেতন করতে জেলা স্বাস্থ্য দফতর লিফলেট বিলি করার পরিকল্পনা নিয়েছে। পাশাপাশি স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে জলের গুণমান ঠিক আছে কি না তা জানতে স্যানিটারি সার্ভে শুরু করার কথাও ভাবা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই মশা বাহিত রোগ এড়াতে নবান্ন থেকে রাজ্যের সব পুরসভাকে সতর্ক করা হয়েছে। নিয়মিত জঞ্জাল সাফাই, নিকাশি নালা পরিষ্কার এবং মশানাশক তেল ও স্প্রে করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঘাটালের পুর-চেয়ারম্যান বিভাস ঘোষ বলেন, “আমরা শহর জুড়ে নলকূপ এবং জলের ট্যাপ সংলগ্ন নোংরা পরিষ্কারের কাজ শুরু করেছি। প্রচার শুরু করা হয়েছে।” একই দাবি, মহকুমার অন্য পুরসভাগুলিরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন