কয়েক দিন আগের ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে জানতে পেরে পাঁশকুড়ার জিয়াদা গ্রামের এক ঝোপ থেকে পাঁচটি বাঘরোল ছানা উদ্ধার করেছিল জেলা বন দফতর। উদ্ধার হওয়া ছানাগুলিকে শুশ্রূষার পর পাঠানো হয়েছিল আলিপুর চিড়িয়াখানায়। কিছুদিন আগে নন্দকুমারের খঞ্চি গ্রামে ৪৫ টি পাহাড়ি টিয়ার ছানা উদ্ধার করে পাঠানো হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঝাড়গ্রামের মিনি চিড়িয়াখানায়।
জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্ধার করা পশু, পাখি ও সরীসৃপকে রাখার ব্যবস্থা না থাকায় এ ভাবেই পাশের জেলা বা কলকাতায় পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হয়। এই সমস্যা দূর করতে এ বার দিঘার কাছে শঙ্করপুরে রেসকিউ সেন্টার গড়ছে জেলা বন দফতর। শঙ্করপুরে সমুদ্র সৈকতের কাছে বন দফতরের বিট অফিসের চত্বরে সেন্টার গড়ার কাজ চলছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের বন আধিকারিক স্বাগতা দাস বলেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া পশু, পাখি, সরীসৃপ ও কচ্ছপ জাতীয় বিভিন্ন প্রাণী রাখার জন্য শঙ্করপুরে আশ্রয় কেন্দ্র গড়া হচ্ছে। সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ এই সেন্টার চালু হবে বলেই আশা।’’
জেলা বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শঙ্করপুরে বন দফতরের বীট অফিসের ক্যাম্পাসে বর্তমানে একটি আশ্রয় জলাশয় রয়েছে। বিভিন্ন এলাকা উদ্ধার করা মিষ্টি জলের কচ্ছপ সেখানে রাখা হয়। বর্তমানে সেখানে এরকম ৪০০ টির মত কচ্ছপ রয়েছে। কিন্তু এতদিন জেলায় উদ্ধার করা অনান্য পশু , পাখি বা সরীসৃপ জাতীয় প্রাণীদের রাখার ব্যবস্থা ছিল না। ওইসব পশু, পাখিদের কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানায় কিংবা পশ্চিম মেদিনীপুরে পাঠাতে অনেকটা সময় ও খরচ বেশী হয় বলে অভিযোগ। সেই সমস্যা মেটাতেই শঙ্করপুরে এমন উদ্যোগ বলে বন দফতর সূত্রে খবর।
ইন্টিগ্রেডেড কোস্টাল জোন ম্যানেজমেন্ট কর্মসূচির অধীনে বিশ্ব ব্যাঙ্কের আর্থিক সহায়তায় রেসকিঊ সেন্টার গড়ার জন্য ১৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। জেলা বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন এই রেসকিউ সেন্টারে চারটি আলাদা ঘর থাকবে। একটি হনুমান, বাদর প্রভৃতি প্রাণীদের রাখার জন্য। একটি বনবিড়াল, ভাম প্রভৃতির জন্য। একটি পাখিদের জন্য। একটি সরীসৃপ জাতীয় প্রাণীদের রাখার জন্য। সেন্টারে একটি পশু চিকিৎসালয়ও থাকবে। সেখানেই অসুস্থ পশুদের চিকিৎসা করবেন প্রাণি চিকিৎসকরা।
জেলা বন আধিকারিক জানান, আলিপুর চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করে প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। তবে এখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশের অনুমতি থাকবে না।