প্রতিরোধী যক্ষ্মায় বিন্দুমাত্র সময় নষ্ট না করাই ভাল। দেরি হলে এই রোগের সংক্রমণ ছড়িয়ে প়ড়ার আশঙ্কা থাকে। সাধারণ যক্ষ্মার থেকে প্রতিরোধী যক্ষ্মা সারতেও সময় লাগে। এতদিন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রতিরোধী যক্ষ্মা নির্ণয়ের কোনও পরিকাঠামো না থাকায় সমস্যায় পড়তেন রোগীরা। সম্প্রতি প্রতিরোধী যক্ষ্মা নির্ণয়ের পরিকাঠামো গড়া হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যালে। ফলে প্রতিরোধী যক্ষ্মা নির্ণয়ে আর কোনও সমস্যা হবে না বলেই স্বাস্থ্য আধিকারিকদের মত।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা যক্ষ্মা আধিকারিক শক্তিপদ মুর্মু বলেন, “এখন মেদিনীপুরেই প্রতিরোধী যক্ষ্মা নির্ণয় হচ্ছে। ওই রোগের চিকিৎসাও হচ্ছে।” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “এ ক্ষেত্রে চিকিৎসা সম্পূর্ণ করতে পারলে রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনাই বেশি। তাই প্রত্যেক রোগী যাতে চিকিৎসা সম্পূর্ণ করেন, সে দিকটি গুরুত্ব দিয়েই দেখা হয়।”
প্রতিরোধী যক্ষ্মা কী? ‘মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট’ (এমডিআর) যক্ষ্মাকেই প্রতিরোধী যক্ষ্মা বলা হয়। এ ক্ষেত্রে প্রচলিত কোনও ওষুধে এই যক্ষ্মা সারে না। স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রে খবর, নতুন যক্ষ্মা রোগীদের ২-৩ শতাংশ এমডিআর যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়, আর যত যক্ষ্মা রোগী দ্বিতীয় বার যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয় তাদের ১৫ শতাংশের দেহে এমডিআর যক্ষ্মা পাওয়া যায়। সাধারণত হাঁচি, কাশি, কফের মাধ্যমে যক্ষ্মা ছড়ায়। সাধারণ যক্ষ্মা ৬- ৯ মাসের চিকিৎসায় সেরে ওঠে। কিন্তু প্রতিরোধী যক্ষ্মা সারতে নূন্যতম ২৪- ২৭ মাস সময় লাগে। এই চিকিৎসা ব্যয়বহুলও। জেলায় এখন প্রতিরোধী যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা কত? স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রের দাবি, সংখ্যাটা ২৪৫। এরমধ্যে নিয়মিত চিকিৎসা করাচ্ছেন ১৫৫ জন। জেলায় এখন যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা কত? স্বাস্থ্য দফতরের ওই সূত্রের দাবি, সংখ্যাটা ৩,২৮৫। বেসরকারি সূত্রের অবশ্য দাবি, সংখ্যাটা অনেক বেশি।
এতদিন প্রতিরোধী যক্ষ্মা নির্ণয়ের জন্য কফের নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতায় পাঠানো হত। নমুনা পাঠানোর ২০-২২ দিন পর রিপোর্ট আসত। কখনও কখনও আরও বেশি সময় লাগত। ফলে, চিকিৎসা শুরু হতেই অনেকটা সময় গড়িয়ে যেত। জেলার এক স্বাস্থ্য-কর্তার দাবি, “এখন মেদিনীপুর মেডিক্যালে যন্ত্র রয়েছে। ফলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রিপোর্ট পাওয়া সম্ভব।” তাঁর বক্তব্য, “যক্ষ্মা প্রতিরোধে এখন নিয়মিত চিকিৎসার উপরই জোর দেওয়া হচ্ছে।”