প্রতীকী ছবি।
নিজের এলাকাতেই হেনস্থার মুখে পড়তে হয়েছে ঘাটালের বিধায়ক শঙ্কর দোলইকে। কেন এমন হল, তা নিয়েই আলোচনা শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে।
কলেজ জীবন থেকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত শঙ্কর। বহুবার ভোটে লড়ে জিতেছেন। দক্ষ সংগঠক। বিধায়ক তথা এলাকার এমন ‘প্রভাবশালী’ নেতার প্রকাশ্যে হেনস্থার ছবি দেখে বিস্মিত তৃণমূলের অনেকেই। প্রকাশ্যে কেউ মুখ না খুললেও দলের মধ্যে চলছে আলোচনা। সত্যি কি উন্নয়ন নিয়ে পক্ষপাতের অভিযোগে হেনস্থা হতে হল বিধায়ককে। নাকি এর পিছনে রয়েছে অন্য কোনও সমীকরণ! তৃণমূলের একাংশ মনে করিয়ে দিচ্ছেন, শুধু বিধানসভা বা ব্লক এলাকা নয়। স্কুল-কলেজ পরিচালন সমিতি থেকে সমবায় একাধিক সংস্থার মাথায় রয়েছেন শঙ্কর। ঘাটাল কলেজের ছাত্র সংসদের দায়িত্বেও তাঁরই ছেলে তুফান দোলই। সেই সব তো বটেই। নিতান্তই ঘরোয়া নানা সমস্যার সমাধানের জন্য অনেকেই ছুটে যান তাঁর কাছে। তৃণমূলের একাংশের অনুযোগ, ছোট বিষয়ে বিধায়কের হস্তক্ষেপ করার প্রবণতায় তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে।
বিধায়ক নিজে বলছেন, ‘‘সোমবার যা হয়েছে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন ঘটনা। দীর্ঘদিন এলাকার মানুষের সঙ্গে মিশে রাজনীতি করি। উন্নয়ন নিয়ে কারও কোনও প্রশ্ন বা চাহিদা থাকতেই পারে। কিন্তু সেটাও রীতি মেনে হওয়ায় বিধেয়।” উন্নয়নে পক্ষপাত হচ্ছে— এই অভিযোগ তুলে সোমবার শিমুলিয়া সংসদের পঞ্চায়েত সদস্য শেখ আব্দুস সালাম সহ জনা চল্লিশেক তৃণমূল কর্মী বিধায়কের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁদের মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। দু’দফায় পথ অবরোধ হয়। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে হেনস্থার মুখে পড়েন বিধায়ক। সোমবারের ঘটনা দেখে প্রমাদ গুনছেন শাসক দলের অনেক নেতাই। মঙ্গলবার এক তৃণমূল নেতা বললেন, ‘‘বিধায়ক হেনস্থার পর অনেকে রাতারাতি সতর্ক হচ্ছেন। কেউ সংগঠনে মন দিয়েছেন। কেউ কেউ আবার এলাকার মানুষের সঙ্গে ভাল আচরণ শুরু করে দিয়েছেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বিধায়ক হেনস্থায় কর্মী-সমর্থকদের ক্ষোভের বহি:প্রকাশ নেই তো, মূলত এই আশঙ্কা থেকে সতর্ক হচ্ছেন অনেকে।’’ জেলা তৃণমূল সভাপতি অজিত মাইতি বলছেন, ‘‘ঠিক কী হয়েছে জানতে বিধায়কের সঙ্গে কথা বলব।’’
জল্পনা চলছে শাসক দলের শিবিরে। তবে এখনও নিজের অবস্থানে অনড় শেখ আব্দুস। তাঁর কথায়, ‘‘এলাকার উন্নয়নের দাবিতে এতকিছু। দাবি মিটলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।’’