নেই নজরদারি, শিলাবতী সাঁতরে দেদার খোঁড়াখুঁড়ি ‘প্রত্ন-স্তূপে’

শুক্রবার গড়বেতার রাজবল্লভপুরে ওই ধ্বংসাবশেষের ভিতর থেকেই ওই মুদ্রা পাওয়ার ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় শোরগোল পড়েছে। বাড়িটি সংরক্ষণের দাবিও জোরদার হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৩৮
Share:

নিদর্শন: শিলাবতীতে মিলেছে এই চাকতিই। নিজস্ব চিত্র

দিন কয়েক আগে শিলাবতী নদীর মাঝখানে আচমকাই দেখা গিয়েছিল একটি প্রাচীন বাড়ির ধ্বংসাবশেষ। সেটা কোনও মন্দির না নীলকুঠি— তা এখনও পরিষ্কার হয়নি। এরই মধ্যে ওই ধ্বংসাবশেষ থেকে প্রাচীন মুদ্রার মতো দেখতে কিছু বস্তু মিলল। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা। উঠছে প্রশাসনিক উদাসীনতার অভিযোগও।

Advertisement

শুক্রবার গড়বেতার রাজবল্লভপুরে ওই ধ্বংসাবশেষের ভিতর থেকেই ওই মুদ্রা পাওয়ার ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় শোরগোল পড়েছে। বাড়িটি সংরক্ষণের দাবিও জোরদার হয়েছে। মেদিনীপুর সদরের মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষ বলেন, “ইতিহাসবিদ ও এলাকার প্রবীণদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি। প্রাচীন মুদ্রার বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি। প্রয়োজনে পুরাতত্ত্ব বিভাগের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হবে।”

শুক্রবার এলাকার কিছু যুবক গোল চাকতির মতো কিছু বস্তু নিয়ে আসেন। তাঁদের দাবি, ওগুলি প্রাচীন কোনও মুদ্রা হতে পারে। স্থানীয় বাসিন্দা, রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষক মঙ্গলপ্রসাদ মাইতি বলেন, “আমার ছেলে ও তাঁর বন্ধুরা ওই চাকতিগুলি নিয়ে এসে দেখিয়েছে। প্রত্ন নিদর্শন হলেও হতে পারে। প্রশাসনের হাতে তুলে দেব।”

Advertisement

এ বছর ডিসেম্বরের শেষেও শিলাবতীতে কোমর সমান জল রয়েছে। চলতি মাসেই নদীর বুকে ভেসে উঠেছিল ওই ধ্বংসাবশেষ। তারপর থেকে আশপাশের গ্রামের মানুষ দলে দলে ভিড় জমিয়েছেন। এমনকী পুরনো স্থাপত্য নিয়ে উৎসাহের আতিশয্যে তাঁরা নদী সাঁতরে গিয়ে উঠছেন ওই বাড়িতে। অভিযোগ, শাবল, গাঁইতি দিয়ে খোঁড়াখুঁড়িও চলছে দেদার। নদীতে স্নান করার নাম করে প্রতিদিনই ধ্বংসাবেশেষের ভিতরে ঢুকে পড়ছেন এক শ্রেণির মানুষ।

স্থানীয় বসিন্দাদের দাবি, যে ভাবে ছোট ইট দিয়ে চুন-সুরকির গাঁথা দেওয়ালটি কাটাকাটি চলছে, এখনই বন্ধ হওয়া জরুরি। শাবল দিয়ে ইটগুলিকে বের করে রাতের অন্ধকারে অনেকে নিয়ে চলেও যাচ্ছেন। বাসিন্দারা বলছেন, “এমনিতেই এখানে বালি মাফিয়াদের বাড়বাড়ন্ত। নদীতে জেসিবি মেশিন দিয়ে বালি তোলা হচ্ছে। রাতের অন্ধকারে হয়তো আস্ত ধ্বংসাবশেষটি পাচার হয়ে যাবে কোনও দিন।” তাঁদের আক্ষেপ, দিন দশেক হল স্তূপটির দেখা মিলেছে। অথচ, প্রশাসনের হেলদোল নেই।

জেলা প্রশাসনের দাবি, প্রাথমিক ভাবে স্থাপত্যটি ব্রিটিশ আমলে বা সেই সময়কার তৈরি বলেই অনুমান। তবে কোনও পুরনো বাড়ি না মন্দির— তা এখনই বলা সম্ভব নয়।

মেদিনীপুরের মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষ বললেন, “যাতে ধ্বংসাবশেষটি কেউ নষ্ট না করে সে বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে। তবে এলাকার মানুষকেও প্রশাসনকে সাহায্য করতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন