প্রকৃতির ডাকে মাঠে, হাতির হানায় প্রাণ গেল প্রৌঢ়ের

বছর খানেক হল বাড়িতে সরকারি প্রকল্পের শৌচাগার হয়েছে। কিন্তু তাও প্রকৃতির ডাকে মাঠেই  যেতেন ঝাড়গ্রামের বামুনমারা গ্রামের অজিত রায় (৫৫)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৮ ০৪:৩৮
Share:

বছর খানেক হল বাড়িতে সরকারি প্রকল্পের শৌচাগার হয়েছে। কিন্তু তাও প্রকৃতির ডাকে মাঠেই যেতেন ঝাড়গ্রামের বামুনমারা গ্রামের অজিত রায় (৫৫)। রবিবার ভোরে সে কাজে গিয়েই হাতির হামলায় মৃত্যু হল অজিতবাবুর। এই ঘটনায় শোরগোল পড়েছে। মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে বাড়িতে শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হয়। কিন্তু গ্রামাঞ্চলের সিংহভাগ বাসিন্দারা তা ব্যবহার করছেন না বলে অভিযোগ ছিল। অজিতবাবুর মৃত্যুতে বিষয়টি ফের প্রকাশ্যে এল। তাঁর বড় ছেলে স্থানীয় চালকলের শ্রমিক ফুলচাঁদ বলেন, ‘‘বছর খানেক হল বাড়িতে শৌচাগার হয়েছে। কিন্তু বাবা তাতে অভ্যস্ত ছিলেন না বলেই মাঠে যেতেন।’’

Advertisement

ঝাড়গ্রাম ব্লকের গড়শালবনি পঞ্চায়েতের বামুনমারা গ্রামের অদূরে লাউড়িয়ার জঙ্গল। গোটা তিনেক রেসিডেন্ট হাতি রয়েছে যেখানে। তারাই হানা দিচ্ছে লোকালয়ে।

রোজকার মতো এ দিনও ভোরের আলো ফোটার আগেই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন অজিতবাবু। তখন লাউড়িয়ার জঙ্গল থেকে বামুনমারা গ্রামে ঢুকেছিল রেসিডেন্ট দাঁতালটি। অজিতবাবুর বাড়ির কাছেই একটি চাল কলের গ্রিলের গেট ভেঙে চত্বরে ঢোকে সে। ফুলচাঁদ বলেন, ‘‘হাতি এসেছে জেনে ভয় পেয়ে যাই। বাবার খোঁজে কিছুদূর এগিয়ে দেখি মাঠে ঝোপের মধ্যে পড়ে রয়েছে বাবার থেঁতলানো দেহ।’’ তাঁর আক্ষেপ, ‘‘বাবা শৌচাগার ব্যবহার করলে হয়তো এই পরিণতি হত না।’’

Advertisement

মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে জানিয়ে ঝাড়গ্রামের ডিএফও বাসবরাজ হোলাইচ্চি বলেন, ‘‘লাউড়িয়ার জঙ্গলে তিনটি রেসিডেন্ট হাতি রয়েছে। হাতিগুলিকে অন্যত্র সরানোর চেষ্টা হচ্ছে।’’ বন দফতরের আরও বক্তব্য, জঙ্গল লাগোয়া গ্রামের বাসিন্দাদের ভোরের দিকে জঙ্গলের কাছাকাছি না যাওয়ার জন্য নিয়মিত প্রচার করা হয়। কিন্তু তাও একাংশ বাসিন্দা তা শোনেন না। ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানির বক্তব্য, ‘‘গ্রামের বাসিন্দাদের শৌচাগারমুখী করতে বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতা প্রচার চলছে। বামুনমারা গ্রামেও সচেতনতা কর্মসূচি করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন