—প্রতীকী ছবি।
ফোনের ওপারের ব্যক্তি নিজেকে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার পরিচয় দেওয়ায় সহজেই বিশ্বাস হয়ে যায় তাঁর। ফাঁদে পা দিয়ে ফোনেই এটিএমের কার্ড নম্বর ও ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি)ও দিয়ে দেন তিনি। মুহূর্তের মধ্যেই ফোনে ঢোকে টাকা কেটে নেওয়ার এসএমএস। মঙ্গলবারের ঘটনায় পুলিশে অভিযাগ জানিয়েছেন খড়্গপুর গ্রামীণ থানার চকগোবিন্দ সংলগ্ন সানকৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রৌঢ়া অঞ্জলি বেরা।
বছর ছয়েক আগে হ্দরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন অঞ্জলিদেবীর স্বামী। তাঁর এক মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। সেনা জওয়ান ছেলে ঝাঁসিতে স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন। বাড়িতে একাই থাকেন ওই প্রৌঢ়া। সম্প্রতি চকগোবিন্দ এলাকায় তাঁর একটি ৩ ডেসিমেল জমি নিয়ে গোলমাল চলছিল। তাই খুব কম দামে ওই জমি বিক্রি করে দেন তিনি। ওই টাকা রেখেছিলেন একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মাওয়া শাখায়। ডায়াবেটিসের রোগী অঞ্জলিদেবী নিজের চিকিৎসার জন্যই ওই টাকা খরচ করবেন বলে ঠিক করেছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুরের ঘটনায় তিনি দিশাহারা।
অঞ্জলিদেবীর অভিযোগ, “ফোনে ব্যাঙ্কের অফিসার পরিচয় দিয়ে একজন জানান, আমার এটিএম কার্ড নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছে। কার্ড সক্রিয় করতে আমার থেকে কার্ডের নম্বর চাওয়া হয়। তার পরে আমার মোবাইলে একটি নম্বর আসে। আমি এ সব কিছুই পারিনা। তাই দেওরের ছেলেকে বলতে বলছিলাম। ওরও তেমন অভিজ্ঞতা নেই। তাই ফোনের ওপারে থাকা ব্যক্তিকে সব কিছু জানিয়ে দেওয়া হয়।” তাঁর দাবি, এর পরেই মোবাইলে আসা এসএমএস থেকে তিনি জানতে পারেন তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৬০ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে।
ওই দিন রাতেই থানায় গিয়ে অভিযোগ জানান তিনি। এ দিন টাকা পাওয়ার আশায় ব্যাঙ্কে যান তিনি। কিন্তু সেখানে গিয়েও সুফল মেলেনি। অঞ্জলিদেবী বলেন, “এত বড় ভুল করছি বুঝতে পারিনি। এখন তো ব্যাঙ্কও বলছে ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রে টাকা পাওয়া যায় না। কিন্তু ওই টাকা না পেলে যে আমি অসহায় হয়ে পড়ব!” যদিও বিষয়টি নিয়ে খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “আমরা তো সবসময় সচেতন করছি যে কোনও ফোনে কাউকে এটিএম নম্বর, পিন, ওটিপি না দেওয়ার জন্য। পুজোর সময়ও প্রচার করেছি। তারপরেও মানুষ সচেতন হচ্ছেন না এটা দুর্ভাগ্যের।”