ফের সন্ত্রাসের অভিযোগ, সুতাহাটায় খালি হাতেই বিরোধীরা

বিজেপির মণ্ডল সভাপতি সমীর অগস্তি বলেন, ‘‘দলীয় প্রার্থীদের হাত থেকে মনোনয়ন জমা দেওয়ার বৈধ কাগজ ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। টেঙ্গুয়ায় আমাদের লক্ষ্য করে বোমাও ছোড়া হয়েছে।’’ 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হলদিয়া ও নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৮ ১৩:২০
Share:

সোমবার পাঁশকুড়া ব্লক অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে গেলে বামপ্রার্থীদের উপর এ ভাবেই বাঁশ, লাঠি নিয়ে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন বিধায়ক ইব্রাহিম আলি। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস

আশঙ্কাই সত্যি হল বিরোধীদের!

Advertisement

হাইকোর্টের রায়ে মনোনয়নের দিন একদিন বেড়েছিল ঠিকই। কিন্তু হলদিয়া এবং সুতাহাটায় সোমবারও মনোনয়ন জমা দিতে পারলেন না কংগ্রেস, বাম এবং বিজেপি প্রার্থীরা। এ দিনও তাঁদের অভিযোগের তির শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তাঁদের অভিযোগ, হলদিয়া, সুতাহাটার ব্লক অফিস এবং মহকুমাশাসকের দফতরের সমানে তৃণমূল সমর্থকেরা দল বেঁধে ‘প্রাচীর’ তৈরি করেছিলেন। দাবি, সেই ‘প্রাচীরে’ই পার হতে পারেনি বিরোধীরা। পাশাপাশি, এ দিন খোদ এসডিপিও তন্ময় মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মারধর ও হেনস্থার অভিযোগ করেছে সিপিএম।

সোমবার সকাল থেকেই হলদিয়া সুতাহাটা ব্লক এবং হলদিয়ার মঞ্জুশ্রীতে মহকুমাশাসকের দফতরের বাইরে ভিড় করেছিলেন বিরোধীরা। অভিযোগ, শাসকের বাধায় তারা মনোননয়ন দিতে পারেননি। বিজেপির প্রার্থীরা ব্লক অফিসে ঢোকার চেষ্টা করে। সে সময় বিজেপি নেতা প্রদীপ বিজলি-সহ একাধিক নেতাকে ঘিরে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এছাড়া অভিযোগ, জেলা পরিষদ আসনে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে প্রদীপ প্রধান নামে এক ব্লক নেতা অপহৃত হয়েছেন।

Advertisement

এদিকে, দলের ১০৫ জন প্রার্থীর মনোনয়ন দিতে না পেরে বামেরা পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার-সহ রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে মনোনয়ন পাঠিয়েছে। এ দিন তারা সুতাহাটা বাজারে পথ অবরোধ করে। পরে তন্ময়বাবুর নেতৃত্বে পুলিশ গিয়ে সেই অবরোধ তুলে দেয়।

এদিকে, এসডিপিও’র বিরুদ্ধে সিপিএমের অভিযোগ, তিনি অপূর্ব জানা ও পলাশ জানা নামে দুই সিপিএম প্রার্থীকে ধাক্কা দিয়ে বার করে দিয়েছেন। যদিও এ নিয়ে তন্ময়বাবু বলেন, ‘‘সিপিএমের কয়েকজন লাইন ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

গোটা ঘটনায় জেলা বিজেপি’র সাধারণ সম্পাদক নীলাঞ্জন অধিকারী বলেন, ‘‘শাসকের প্রতিরোধ এবং পুলিশের বাধার জন্যই মনোনয়ন দেওয়া যায়নি।’’ বিজেপি’র জেলা সভাপতি প্রদীপ দাস বলেন, ‘‘আমরা ২০০ জনেরও বেশি প্রার্থীর মনোনয়ন অনলাইনে জমা দিচ্ছি নির্বাচন কমিশনে। তারপর রাজ্য নেতৃত্ব যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন।’’ যদিও তৃণমূল নেতা আনন্দময় অধিকারী বলেন, ‘‘ওদের প্রার্থী নেই। তাই আমাদের ওপর এই সব অজুহাত দিচ্ছে।’’

মনোনয়ন জমার খাতায় নন্দীগ্রামেও এ দিন বিরোধীরা দাগ কাটতে পারেনি। নন্দীগ্রাম থানা মোড় থেকে বিজেপি প্রার্থী তাপস প্রধান- সহ তিন জনকে অপহরণ করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতা বাবু রাউতের বিরুদ্ধে। বিজেপির মণ্ডল সভাপতি সমীর অগস্তি বলেন, ‘‘দলীয় প্রার্থীদের হাত থেকে মনোনয়ন জমা দেওয়ার বৈধ কাগজ ছিনিয়ে নিয়েছে তৃণমূল। টেঙ্গুয়ায় আমাদের লক্ষ্য করে বোমাও ছোড়া হয়েছে।’’ নন্দীগ্রাম-২ ব্লকেও একই অভিযোগ বিরোধীদের। যদিও নন্দীগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি মেঘনাথ পাল এ নিয়ে বলেন, ‘‘আমাদের মনোনয়ন তো কবেই সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। আমরা কোথাও ছিলাম না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন