জেলায় ঠিক কতজন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত, তা নিয়ে অন্ধকারে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। বেসরকারি হাসপাতালগুলি থেকে সময় মতো রিপোর্ট না আসায় সমস্যা বাড়ছে। পরিস্থিতি দেখে জেলার সব বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গি সংক্রান্ত তথ্য পাঠানোর নির্দেশিকা পাঠিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর।
দফতরের এক সূত্রে খবর, নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, রোজ জেলার স্বাস্থ্য ভবনে রিপোর্ট পাঠাতে হবে। জানাতে হবে, ডেঙ্গির মতো উপসর্গ নিয়ে ঠিক কতজন রোগী ভর্তি রয়েছেন। দফতরের ওই সূত্র মানছে, এখন বিভিন্ন মহকুমা হাসপাতাল, ব্লক হাসপাতালে জ্বর নিয়ে অনেকেই ভর্তি রয়েছেন। বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নার্সিং হোম থেকে যথাযথ রিপোর্ট না আসায় ডেঙ্গির আসল চিত্রটা পরিষ্কার হচ্ছে না।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা কত? সরকারি সূত্রের দাবি, সংখ্যাটা ৪২। বেসরকারি সূত্রের মতে, সংখ্যাটা ২০০- রও বেশি! কেন এই ফারাক? ধোঁয়াশা কাটালেন জেলার এক স্বাস্থ্য- কর্তাই। ওই কর্তার কথায়, “সরকারি হাসপাতালগুলো থেকে রোজই দফতরে রিপোর্ট আসে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী ডেঙ্গির মতো উপসর্গ নিয়ে এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪২ জন। তবে জেলায় বহু বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। সেই সব হাসপাতাল থেকে নিয়মিত রিপোর্ট আসছে না। তাই এই সমস্যা।” তিনি মানছেন, “সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গির মতো উপসর্গ নিয়ে যতজন ভর্তি রয়েছেন, বেসরকারি হাসপাতালে তার থেকে কয়েকগুন বেশি রোগী ভর্তি রয়েছেন। যেহেতু রিপোর্ট আসছে না তাই সংখ্যাটা নির্দিষ্ট করে বলাও সম্ভব নয়!”
বেসরকারি হাসপাতালগুলোর কাছে নির্দেশিকা পাঠানো প্রসঙ্গে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। রোজ রিপোর্ট দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।” পাশাপাশি, তাঁর দাবি, “পশ্চিম মেদিনীপুরে এখনও ডেঙ্গি নিয়ে উদ্বেগের মতো কিছু হয়নি। জ্বরে আক্রান্তদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পাঠানো হচ্ছে। ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে যে ৪০- ৪২ জন ভর্তি, তাঁদের উপর নজর রাখা হয়েছে।”
জেলার বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় অ্যালাইজা পরীক্ষা হয় না। হয় র্যাপিড টেস্ট। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, “ডেঙ্গির নিশ্চিত পরীক্ষা শুধুমাত্র মেদিনীপুর মেডিক্যালেই হয়। ম্যাক অ্যালাইজা কিংবা এনএস- ১ অ্যালাইজা নিশ্চিত ভাবে ডেঙ্গি নির্ধারণ করতে পারে। এখন বিভিন্ন জায়গায় বাজার চলতি এনএস- ১ র্যাপিড টেস্ট করা হচ্ছে। এটা ডেঙ্গির নিশ্চিত পরীক্ষা নয়। র্যাপিড টেস্ট করেই ডেঙ্গি বলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে।”