বাড়ির বর্জ্য নিয়ে যেতে দোরে পঞ্চায়েত কর্মীরাও

এতদিন শুধু শহরেই শোনা যেত বাঁশির আওয়াজ। মেঠো বাঁশি নয়। নিতান্তই কর্কশ সে আওয়াজ ভেসে এলেই দৌড়ে আসেন পুর-নাগরিকরা। হাতে আগের দিনের জমানো গেরস্থালির আবর্জনা। শহরাঞ্চলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আবর্জনা সংগ্রহ করেন পুরসভার সাফাই কর্মীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:০৮
Share:

এখানেই জমা করা হবে জঞ্জাল। নিজস্ব চিত্র।

এতদিন শুধু শহরেই শোনা যেত বাঁশির আওয়াজ। মেঠো বাঁশি নয়। নিতান্তই কর্কশ সে আওয়াজ ভেসে এলেই দৌড়ে আসেন পুর-নাগরিকরা। হাতে আগের দিনের জমানো গেরস্থালির আবর্জনা। শহরাঞ্চলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আবর্জনা সংগ্রহ করেন পুরসভার সাফাই কর্মীরা। এ বার মিশন নির্মল বাংলার সৌজন্যে এ বার সেই পরিষেবা পাবেন জঙ্গলমহলের গোয়ালতোড় এলাকার বাসিন্দারাও।

Advertisement

রবিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড় ব্লকের সারবোত পঞ্চায়েতের উদ্যোগে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের সূচনা হল। এলাকাকে নির্মল রাখতে এ বার পঞ্চায়েতের উদ্যোগে ভোর হলেই পাড়ায় পাড়ায় পৌঁছে যাবেন সাফাই কর্মীরা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে নোংরা-আবর্জনা সংগ্রহ করে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে নিয়ে গিয়ে ফেলবেন সাফাই কর্মীরা। সেখানে পচনশীল এবং অপচনশীল বর্জ্য আলাদা করে নির্দিষ্ট যন্ত্রের মাধ্যমে তৈরি হবে জৈব সার। তা স্বল্প মূল্যে বিলি করা হবে কৃষকদের মধ্যে। অপচনশীল বর্জ্য যন্ত্রের মাধ্যমে নিষ্কাশন করেই জমি ভরাট বা অন্য কাজে ব্যবহার করা হবে।

এ জন্য স্থানীয় রাজবাঁধ এলাকায় দু’একর ফাঁকা জমির উপর মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পের আর্থিক সাহায্য এবং তৃতীয় ও চতুর্দশ অর্থ কমিশনের টাকায় এটি তৈরি হয়েছে। খরচ পড়েছে মোট ৩৩ লক্ষ টাকা। ৩৮টি মৌজার এই জনপদে তিন হাজার পরিবারের বাস। মোট জনসংখ্যা প্রায় ১২ হাজার। পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ অরুণ পান এবং প্রধান অজিত লোহার জানান, প্রতিটি বাড়িতে ২টি করে বালতি দেওয়া হবে। একটিতে পচনশীল বর্জ্য এবং অপরটিতে পচনশীল নয়-এমনই বর্জ্য জমা রাখবেন বাসিন্দারা। কেনা হয়েছে দুটি টোটো। গাড়ি গুলিতে আলাদা বাক্স লাগানো হয়েছে। সাফাই কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেগুলি সংগ্রহ করে আনবেন।

Advertisement

প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন গড়বেতার বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী। ছিলেন গোয়ালতোড় পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত ও পরিবহণ কর্মাধ্যক্ষ অরুণ পান, পঞ্চায়েত প্রধান অজিত লোহার, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মঞ্জু দুলে-সহ ব্লক ও পঞ্চায়েতের আধিকারিকরা। প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলার বেশ কয়েকটি ব্লকে ইতিমধ্যেই প্রকল্পটি চালু হয়েছে। এ বার ধীরে ধীরে জেলার সমস্ত পঞ্চায়েত এলাকাতেই চালু করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। নির্মল গ্রাম গড়তে একাধিক বার বৈঠক হয়েছে। গ্রামে শিবিরও করা হচ্ছে। মেদিনীপুর সদরের মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষ বলেন, “রবিবার সারবোত পঞ্চায়েতে পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে প্রকল্পটি চালু হয়েছে। ওই ব্লকের অনান্য পঞ্চায়েত গুলিতেও চালুর বিষয়ে উদ্যোগী হব।”

পঞ্চায়েতের এই উদ্যোগে খুশি সারবোত গ্রামের বাসিন্দারাও। স্থানীয় রাধারানিদেবী বলেন, “আমরা আর যেখানে সেখানে নোংরা ফেলব না। বালতিতেই জমা রাখব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন