ওয়ার্ড মাস্টারের ঘরের সামনে বোর্ড। নিজস্ব চিত্র
সঙ্কটজনক রোগীর জন্যই সিসিইউ (ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট)-এর ব্যবস্থা। অথচ মেদিনীপুর মেডিক্যালের সেই ইউনিট নিজেই শয্যা সঙ্কটে ভুগছে!
গত বুধবার মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছিলেন চন্দ্রকোনার জয়জিৎ ঘোষ। ষাট ছুঁইছুঁই জয়জিৎবাবু হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন। মেডিক্যালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছিলেন, রোগীর অবস্থা সঙ্কটজনক। সিসিইউ-তে রাখাই ভাল। সিসিইউ-তে অবশ্য সে দিন কোনও শয্যা খালি ছিল না। অগত্যা জয়জিৎবাবুকে সাধারণ শয্যায় রাখা হয়। একটি শয্যা খালি হতে শুক্রবার তাঁকে সিসিইউ-তে পাঠানো হয়। তবে বাঁচানো যায়নি। রবিবার সকালে মৃত্যু হয় ওই প্রৌঢ়ের। মৃতের এক পরিজন বলছিলেন, “জেলার সব থেকে বড় সরকারি হাসপাতালেও যদি পরিষেবা না মেলে, তাহলে আমরা যাব কোথায়!”
মেদিনীপুর মেডিক্যালের সিসিইউ-তে শয্যা রয়েছে মাত্র ১০টি। অথচ, হাসপাতালে সাধারণ শয্যার সংখ্যা ৬৬০। আর গড়ে দিনে রোগী ভর্তি থাকেন ৭৫০- ৮০০ জন। সেই অনুপাতে সিসিইউ-র শয্যা সংখ্যা যে কম তা মানছেন হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের এক কর্তার কথায়, “চিকিৎসকেরা রোগীকে সিসিইউ-তে রাখার পরামর্শও দিলেও কিছু করার থাকে না। পরিজনেরা রাজি থাকলে রোগীকে কলকাতার হাসপাতালে রেফার করা হয়।’’ হাসপাতাল সূত্রে খবর, সিসিইউ-তে আরও ১৪টি শয্যা বাড়বে। হাসপাতাল সুপার তন্ময়কান্তি পাঁজার কথায়, “সিসিইউ-তে শয্যা সংখ্যা বাড়বে। ইতিমধ্যে কাজ অনেক দূর এগিয়েছে।’’
বছর কয়েক আগেও মেদিনীপুর মেডিক্যালে সিসিইউ ছিল না। ছিল আইসিইউ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট)। পরে আইসিইউ বদলে যায় সিসিইউ-তে। নতুন করে কিছু পরিকাঠামো গড়ে ওঠে। ৬টি শয্যা থেকে বেড়ে সিসিইউ-তে শয্যা হয় ১০টি। হাসপাতালের এক সূত্রে খবর, সিসিইউ-র শয্যা সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করতেই অনেকটা সময় চলে যায়। এ ক্ষেত্রে রাজ্যের অনুমোদন লাগে। শুরুতে রাজ্যের কাছে প্রস্তাব পাঠাতে হয়। অনুমোদন মিললে তবেই কাজ শুরু হয়। এক সময়ে ঠিক হয়েছিল শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে ১৬টি করা হবে। পরে ঠিক হয়, শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে ২৪টি করা হবে। সেই মতো রাজ্যের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।