রাস্তার পাশে পড়ে থাকা এক কৌটো ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল পশ্চিম মেদিনীপুরের ধেড়ুয়ায়। ঘটনাটি বুধবার রাতের। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। আসেন জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষও। পুলিশ অবশ্য ঘটনাটিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। কৌটোর মধ্যে কি ছিল, আদৌ কিছু ছিল কি না, তাও জানাতে নারাজ তারা। রাস্তার পাশে কি পড়ে ছিল? জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের জবাব, “তেমন কিছু নয়। গাছের পাতা ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায়নি।” রাতে মেদিনীপুর থেকে দমকলের একটি গাড়িও ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দেয়। অবশ্য গাড়িটি মাঝপথ থেকেই ফিরে আসে।
বুধবারই লালগড়ে এসেছিলেন সিআরপি-র ডিজি প্রকাশ মিশ্র। উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক শেষে তিনি বলেন, “এখনও কয়েকজন শীর্ষ মাওবাদী নেতা অধরা। স্থানীয় সূত্রে জঙ্গলমহলে তাদের গতিবিধির খবর পাওয়া যাচ্ছে। আমরা কড়া নজরদারি চালাচ্ছি। এ ধরণের অভিযানে সব সময় সতর্ক থাকতে হয়। না- হলে যে কোনও সময় কিছু ঘটে যেতে পারে।” গোয়েন্দারা জেনেছেন, ইউএপিএ মামলায় জনগণের কমিটির নেতা ছত্রধর মাহাতোর সাজা হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে স্থানীয় বাসিন্দাদের আবেগকে উস্কে দেওয়ার চেষ্টাই করছে মাওবাদীরা। গত সোমবার ছত্রধরের মুক্তির দাবিতে মাওবাদী ও জনগণের কমিটি জঙ্গলমহলে ১২ ঘন্টার বন্ধও ডেকেছিল। দিন কয়েক আগে শালবনির বাগমারির জঙ্গল থেকে মাওবাদী নাম লেখা কিছু পোস্টারও উদ্ধার হয়। উদ্ধার হওয়া পোস্টারগুলোতে তৃণমূলকেই নিশানা করা হয়। সেই ক্ষেত্রেও অবশ্য পুলিশ বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি। পুলিশের দাবি, পোস্টারগুলো মাওবাদীদের নয়, স্থানীয় কয়েকজনই এ কাজ করে থাকতে পারে।
পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বও বুধবার রাতের ঘটনা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ। ধেড়ুয়ার পঞ্চায়েত প্রধান তাপসী মাহাতো বলেন, “ধেড়ুয়ার রাস্তায় কোনও কৌটো পড়েছিল বলে আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।” দলের অন্য এক নেতা অঞ্জন বেরার মন্তব্য, “কী একটা পড়েছিল বলে শুনেছি। নিশ্চয়ই তেমন কিছু নয়। কিছু লোক আছে যারা সব সময়ই বিশৃঙ্খলা তৈরির সুযোগ খুঁজছে।” রাজ্যে পালাবদলের পর ২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর মৃত্যু হয় শীর্ষ মাওবাদী নেতার কিষেণজির। কিষেণজির মৃত্যুর পর অবশ্য রাজ্যে কোনও মাওবাদী- নাশকতার ঘটনা ঘটেনি। এই সূত্রেই নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “সমস্ত কিছু খুব হালকা ভাবে দেখা ঠিক নয়। হালকা ভাবে দেখাও হচ্ছে না। যা যা করণীয়, তাই তাই করা হচ্ছে।”