গর্তে জমে জল। কুইকোটা-তাঁতিগেড়িয়া রাস্তায়। — সৌমেশ্বর মণ্ডল।
ভাগের রাস্তা সংস্কার হয় না!
কথাটা ষোলোআনা খাটে মেদিনীপুর শহরের কুইকোটা থেকে তাঁতিগেড়িয়া রাস্তার ক্ষেত্রে। এই রাস্তাটি না পুরসভা, না পঞ্চায়েতের আওতায় পড়ে। রাস্তার দক্ষিণ দিকে রয়েছে পুর-এলাকা আর উত্তর দিকে পঞ্চায়েত এলাকা। পুর-এলাকা এবং পঞ্চায়েত এলাকাকে আড়াআড়ি ভাগ করে মাঝখান দিয়ে চলে গিয়েছে রাস্তাটি। ফলে, দু’তরফের টানাপড়েনে রাস্তা সংস্কার আর হয় না। পরিণাম, জীর্ণ পথের কঙ্কাল বেরিয়ে গিয়েছে। পিচ উঠে তৈরি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। গর্তে গাড়ির চাকা ঢুকে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটছে। বর্তমানে রাস্তা দেখভালের দায়িত্বে থাকা মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এমকেডিএ)-এর চেয়ারম্যান তথা মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি অবশ্য বলেন, “ওই রাস্তার জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। ইতিমধ্যে কাজ শুরুও হয়েছে।’’
জেলার সদর শহরের এই রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাস্তার একপাশে মেদিনীপুর সদর ব্লক অফিস, পঞ্চায়েত সমিতির অফিস, আর একপাশে সরকারি বাস ডিপো, রয়েছে একাধিক সরকারি আবাসন। এখানে সদর ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর-সহ আরও একাধিক দফতরের অফিস রয়েছে। কাজ হাতে নিয়ে এই সব দফতরেও রোজ বহু মানুষ আসেন। খন্দপথেই সকলকে যাতায়াত করতে হয়। এই রাস্তায় বাস খুব একটা চলে না। শুধু ডিপো থেকে বেরিয়ে বাসগুলো হয় শহরের মধ্যে ঢোকে, না-হয় শহরের বাইরের নির্দিষ্ট রুটে চলে যায়। তবে অটো চলে। খন্দপথে অটোয় যাতায়াতে বিপদ বাড়ে।
এই রাস্তায় পথবাতির সংখ্যাও পর্যাপ্ত নয়। ফলে, সন্ধে নামলেই রাস্তার একাংশ অন্ধকারে ডুবে যায়। তখন বোঝা মুশকিল কোথায় গর্ত! ওই রাস্তার কালভার্টের আশপাশও সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে। কুইকোটার বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা রায়, সায়ন সামন্তরা বলেন, “সন্ধ্যার পর এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে ভয় লাগে লাগে। ছোট-বড় গর্তে গোটা রাস্তাটাই তো বিপজ্জনক।’’ প্রিয়াঙ্কা জানালেন, কখনও-সখনও সংস্কার হয়েছে। তবে বর্ষা যেতেই ফের পুরনো অবস্থা ফিরেছে। সরকারি বাসের এক চালকও মানছেন, “ডিপো থেকে রোজই বাস বের করতে হয়। রাতে আবার বাস ডিপোয় ঢোকাতে হয়। এই রাস্তা দিয়ে পেরোনোটা রীতিমতো ঝক্কির।’’
রাস্তার হাল যে খারাপ তা মানছেন মেদিনীপুর সদর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হরেন্দ্রনাথ মাহাতো। তাঁর বক্তব্য, “রাস্তাটি খারাপ হয়ে গিয়েছে। সংস্কার জরুরি।’’ মেদিনীপুরের (সদর) বিডিও ঋত্বিক হাজরা অবশ্য বলেন, “এমকেডিএ রাস্তাটির মেরামতে উদ্যোগী হয়েছে। আশা করা যায়, কাজ শেষ হলে আর কোনও সমস্যা থাকবে না।’’
শহর মেদিনীপুরের উত্তর-পূর্ব দিকের সঙ্গে উত্তর-পশ্চিম অংশের সংযোগকারী রাস্তাটির হাল কবে ফেরে, সেটাই দেখার!