অনিয়ম আটকাতে ডিজিটাল করা হয়েছিল রেশন কার্ড। সমস্যা মিটল

দাবিদার নেই, পড়ে আছে কয়েক হাজার রেশন কার্ড

সেখানে এক জন গ্রাহকের একাধিক ডিজিটাল কার্ডের খোঁজ এবং সেই কার্ড দেখিয়ে রেশন দোকান থেকে অতিরিক্ত খাদ্যসামগ্রী তোলার অভিযোগ ইতিমধ্যেই উঠেছে।

Advertisement

আনন্দ মণ্ডল

তমলুক শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:১৮
Share:

গ্রাহকের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে কার্ড। নিজস্ব চিত্র

সরকারিভাবে বরাদ্দ চাল, গম, আটা ও চিনি-সহ বিভিন্ন সামগ্রী স্বল্প দামে কেনার সুযোগ তো আছেই। বাসিন্দা হিসেবে পরিচয়ের প্রমাণপত্রের জন্য গুরুত্ব রয়েছে রেশনকার্ডের। তাই পুরনো কার্ডের বদলে নতুন ডিজিটাল রেশনকার্ডের জন্য আবেদন করেছিলেন গ্রাহকেরা।

Advertisement

সেখানে এক জন গ্রাহকের একাধিক ডিজিটাল কার্ডের খোঁজ এবং সেই কার্ড দেখিয়ে রেশন দোকান থেকে অতিরিক্ত খাদ্যসামগ্রী তোলার অভিযোগ ইতিমধ্যেই উঠেছে। তবে এর পাশাপাশি খাদ্য দফতর থেকে ডিজিটাল রেশনকার্ড তৈরি পরেও গ্রাহকদের একাংশ সেই কার্ড নেননি এমন অভিযোগও কম নয়। কম সংখ্যায় হলেও ওই কার্ড বণ্টন না হয়ে ব্লক খাদ্য দফতরে এক বছরেরও বেশি পড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ। খাদ্য দফতর সূত্রে খবর, আবেদনের ভিত্তিতে ডিজিটাল রেশনকার্ড তৈরি করে বণ্টনের জন্য ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে ব্লক খাদ্য দফতরে পাঠানো হয়। ওই রেশনকার্ড সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের মাধ্যমে গ্রাহকদের বণ্টনের ব্যবস্থা হয়। অভিযোগ, ওই কার্ডের অনেকটাই বণ্টন হয়নি। ওইসব ডিজিটাল রেশনকার্ড ব্লক খাদ্য দফতরে ফিরিয়ে দেওয়ায় তা সেখানেই পড়ে রয়েছে।

শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে বণ্টন না ৪০০টির বেশি রেশনকার্ড রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। জেলার সমস্ত ব্লক মিলিয়ে কয়েক হাজার ডিজিটাল রেশনকার্ড পড়ে রয়েছে বলে অভিযোগ। কিন্তু ডিজিটাল রেশনকার্ডে বাসিন্দাদের নাম, ঠিকানা থাকা সত্ত্বেও বাসিন্দাদের হাতে তা পৌঁছে দেওয়া যায়নি কেন? কার্ড নেওয়ার জন্য খাদ্য দফতরের তরফে মাইকিং করে বা অন্য কোনও ভাবে গ্রাহকদের জানানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল কি?

Advertisement

শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ জয়দেব বর্মন বলেন, ‘‘কিছু ক্ষেত্রে গ্রাহকের মৃত্যু হওয়ায় তাঁর পরিবারের লোক ডিজিটাল রেশনকার্ড নিতে আগ্রহ দেখাননি। কিছু ক্ষেত্রে আবেদনের পর গ্রাহকের ঠিকানা পরিবর্তনের কারণে তাঁদের রেশনকার্ড বণ্টন করা যায়নি। তবে এই বিষয়ে পঞ্চায়েতের তরফে প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।’’

ওয়েস্টবেঙ্গল এম আর ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক মাধব পাঁজার মতে, ‘‘আর্থ সামাজিক সমীক্ষার ভিত্তিতেই দরিদ্র বাসিন্দারা যাতে স্বল্পমূল্যে খাদ্য সামগ্রী পান সেজন্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনার সূচনা হয়েছিল। কিন্তু অনেক সচ্ছল পরিবার ওই রেশনকার্ড পেয়েছেন। দেখা গিয়েছে, তাঁদের একাংশ রেশন দোকান থেকে স্বল্পমূল্যে চাল, গম ও আটা সংগ্রহের পর এক শ্রেণির ব্যবসায়ীর কাছে অপেক্ষাকৃত বেশিদামে বিক্রি করে দিচ্ছেন।’’

জেলা খাদ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘খাদ্যসামগ্রী বন্টনে স্বচ্ছতা আনতে নানা পদক্ষেপ করা হচ্ছে। তাই একই ব্যক্তির একাধিক রেশনকার্ড থাকলে তা বাতিল এবং বণ্টন না হওয়া রেশনকার্ড ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন