সেজেছে মেদিনীপুরের ক্যাথলিক গির্জা। ছবি: কিংশুক আইচ
তাপমাত্রার পারদ কখনও অনেকটা নেমে যাওয়ায় মালুম হচ্ছে শীতের কাঁপুনি, আবার কখনও পারদ একটু ওঠায় কমছে ঠান্ডার আমেজ। পারদে ওঠা-নামা যেমনই হোক, দোরগোড়ার কড়া নাচ্ছে বড়দিন। শীতের আমেজ সঙ্গে নিয়ে বড়দিনের উত্সবে মাততে চলেছে শহর মেদিনীপুর। ইতিমধ্যে শহরের নানা প্রান্ত সেজে উঠেছে নানা রঙের আলোয়। সেজে উঠেছে চার্চগুলোও। চার্চস্কুল মাঠে আবার মেলা শুরু হতে চলেছে। মেলার প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। দোকানে দোকানে কেনাকাটার ভিড়। ক্রিসমাস ট্রি, গিফট্ বক্স, জিঙ্গল বেল- এর সঙ্গে উত্সবমুখর হয়ে উঠতে চলেছে শহর।
শনিবার থেকেই শহর মেদিনীপুরের আনাচে-কানাচে খুশির আমেজ চোখে পড়তে শুরু করেছে। কেকের দোকানগুলোয় যেমন ভিড় চোখে পড়েছে, তেমনই শপিং মলগুলোতেও এ দিন বেশ ভিড় ছিল। বন্ধুদের সঙ্গে দল বেঁধে শহরের এক শপিং মলে এসেছিলেন সায়ন্তিকা সেন। ক্রিসমাস ইভের প্ল্যান কী? সায়ন্তিকা বলছিলেন, “বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা মারব। সঙ্গে খাওয়াদাওয়া তো আছেই। শনিবার বন্ধুদের সঙ্গে শপিং মলে এলাম। কেনাকাটা করলাম।”
শীতে শহরের পার্কগুলোতেও ভিড় জমে। ছবিটা এ বারও এক। সপ্তাহ কয়েক আগে খুব একটা শীত ছিল না। তবে দিন কয়েক হল শীত পড়েছে। শীতের রোদ গায়ে মেখে শনিবার সকাল থেকে পার্কে পার্কে ভিড় জমিয়েছেন প্রচুর মানুষ। কেউ আসেন বন্ধুদের সঙ্গে। কেউ পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে। মেদিনীপুরের এক বনকর্তা মানছেন, “এই সময় ভিড় হয়ই। শনিবারও শহরের পার্কগুলোয় ভিড় ছিল। বাবা- মায়ের হাত ধরে অনেক ছোট ছোট ছেলেমেয়েও এসেছে। আনন্দ করেছে।” শেখপুরা থেকে সিপাইবাজার, সর্বত্রই উত্সবের আমেজ। চার্চের বাইরে-ভিতরে নানা রঙের আলো। কোথাও টুনি বাল্ব, কোথাও এলইডি আলোর ঝলকানি।
উত্সবে শহর মেদিনীপুরের অন্যতম আকর্ষণ মেলা। শহরের সবথেকে বড় মেলা এই বড়দিনের মেলাই। মেলার জন্য অনেকেই বছরভর অপেক্ষা করে থাকেন। কাল, সোমবার থেকে মেলা শুরু হবে। চলবে এক সপ্তাহ ধরে। চার্চস্কুল মাঠেই এই মেলা বসে। শনিবার সকালে মেলার মাঠে গিয়ে দেখা গেল, ইতিমধ্যে অনেক স্টল বসে গিয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। আতসবাজি প্রদর্শনীও থাকবে। মেদিনীপুরের এই মেলায় একদিকে যেমন নাগরদোলা-সহ ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের মনোরঞ্জনের নানা রকম সরঞ্জাম থাকে, অন্য দিকে তেমনই রকমারি স্টলও থাকে। চার্চের ফাদার জর্জ অ্যান্টনি বলছিলেন, “মেলায় অনেকে আসেন। আশা করি, এ বারও সুষ্ঠু ভাবে উত্সব হবে।”
মেলা চত্বরের পাশাপাশি চার্চও নানা আলোয় সাজানো হয়েছে। আজ, রবিবার রাতে চার্চে প্রার্থনা হবে। এই সময়ও অনেকে চার্চে ভিড় করেন।