চিকিৎসালয়ে রাজার স্মৃতি, সংস্কারের দাবি 

সরকারি হাসপাতাল নেই। ভরসা শুধু উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। তা-ও সেখানে চিকিৎসক নেই। স্বাস্থ্যকর্মীরা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চালান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সাঁকরাইল শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:৫৯
Share:

আগাছার জঙ্গল কুকড়াখুপির চিকিৎসাকেন্দ্রে। নিজস্ব চিত্র

সরকারি হাসপাতাল নেই। ভরসা শুধু উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। তা-ও সেখানে চিকিৎসক নেই। স্বাস্থ্যকর্মীরা উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চালান। সাধারণ অসুখ বিসুখের ওষুধ দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের রগড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কুকড়াখুপির বাসিন্দারা চাইছেন, সংস্কার করা হোক রাজার স্মৃতি বিজড়িত দাতব্য চিকিৎসালয়।

Advertisement

চারের দশকে ঝাড়গ্রামের তৎকালীন রাজা নরসিংহ মল্লদেবের উদ্যোগে কুকড়াখুপি এলাকায় চালু হয়েছিল ওই দাতব্য চিকিৎসাকেন্দ্রটি। এখান থেকে চিকিৎসার সুবিধে পেতেন আশেপাশের ১০৮টি গ্রামের বাসিন্দারা। পরবর্তীকালে কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। এখন সেই কেন্দ্র ভুতুড়ে বাড়ির চেহারা নিয়েছে। চারিদিক আগাছায় ভর্তি।

রাজা নরসিংহের অনুরোধে ইংরেজ সেনাবাহিনীর চিকিৎসক পদে ইস্তফা দিয়ে কেন্দ্রটি চালানোর দায়িত্ব নিয়েছিলেন সনৎকুমার মুখোপাধ্যায় নামে এক চিকিৎসক। ১৯৫২ সালে জমিদারি প্রথা বিলোপের পরে মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট বোর্ডের অধীনে চলে যায় কেন্দ্রটি। পরে তার নাম বদলে হয় কুকড়াখুপি মেডিক্যাল রিলিফ সেন্টার। ১৯৭১ সালে সনতের মৃত্যুর পরে বন্ধ হয়ে যায় সেটি। এলাকাবাসীর দাবি ছিল, আধুনিক ঝাড়গ্রামের রূপকার রাজা নরসিংহ মল্লদেবের স্মৃতি বিজড়িত দাতব্য চিকিৎসা কেন্দ্রটি রূপান্তরিত করা হোক সরকারি হাসপাতালে। সেই দাবি পূরণ হয়নি। ১৯৭৫ সালে তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী অজিত পাঁজার আমলে এটিকে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রূপান্তরিত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে সেই প্রস্তাব কার্যকরী হয়নি।

Advertisement

এলাকাবাসীর বক্তব্য, কুকড়াখুপি এলাকায় শয্যা-সহ হাসপাতাল হলে সাঁকরাইল ব্লকের রগড়া অঞ্চলের ৩৪ টি, আন্ধারি অঞ্চলের ২৪টি এবং বেলিয়াবেড়া ব্লকের পেটবিন্ধি ও খাড়বান্ধি অঞ্চলের আরও ৫০টি গ্রামের বাসিন্দারা উপকৃত হবেন। সব মিলিয়ে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার বাসিন্দা উন্নত চিকিৎসার পরিষেবা পাবেন। এলাকার গ্রামগুলি থেকে নিকটবর্তী ঝাড়গ্রাম জেলা হাসপাতালের দূরত্ব প্রায় ৩৫ কিলোমিটার। বেলিয়াবেড়া ব্লকের তপসিয়া গ্রামীণ হাসপাতালটিও ২৫ কিলোমিটার দূরে। সাঁকরাইল ব্লকের ভাঙাগড় গ্রামীণ হাসপাতালের দূরত্বও প্রায় ২৫ কিলোমিটার।

দাবি কি পূরণ হবে? ওই দাতব্য চিকিৎসালয়ের ভবিষ্যৎ কী হবে? ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক আয়েষা রানি বলেন, ‘‘বাসিন্দাদের সমস্যা ও দাবি খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন