রান্নার গ্যাস সিলিন্ডারের জন্য বিতরক সংস্থার অফিসের সামনে গ্রাহকদের লম্বা লাইন। দেবরাজ ঘোষের তোলা ছবি।
রান্নার গ্যাসের চরম সঙ্কট শুরু হয়েছে ঝাড়গ্রামে। বুকিংয়ের এক মাস পরও সিলিন্ডার পাচ্ছেন না গ্রাহকরা। প্রতিদিন ভোর থেকে ঝাড়গ্রাম শহরের এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটার সংস্থার অফিসের সামনে লাইন দিচ্ছেন কয়েক হাজার গ্রাহক।
ঝাড়গ্রাম শহরে ইন্ডেন গ্যাসের সবচেয়ে পুরনো ডিস্ট্রিবিউটর সংস্থা ‘মেসার্স ক্ষুদিরাম এন্টারপ্রাইজ’-এর আওতায় শহর ও মহকুমার বিভিন্ন এলাকার প্রায় কুড়ি হাজার গ্রাহক রয়েছেন। গ্রাহকদের অভিযোগ, পুজোর সময় সিলিন্ডারের সঙ্কট শুরু হয়েছিল। এখন সেটা চূড়ান্ত আকার ধারণ করেছে। ডিস্ট্রিবিউটর সংস্থাটির অবশ্য দাবি, ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের (আইওসিএল) হলদিয়া ও জামশেদপুর প্ল্যান্ট থেকে চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত সিলিন্ডার পাঠানো হচ্ছে না। সেই জন্যই এমনই সমস্যা।
কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে কার্যত অনেক গ্রাহকের হেঁসেল বন্ধ হয়ে যাওয়ার জোগাড়। গ্রাহকদের অভিযোগ, সিলিন্ডার সঙ্কটের জেরে ডিস্ট্রিবিউটর সংস্থাটির অফিসে টাকা জমা দিয়ে রসিদ নিয়ে সংস্থার গুদামে গিয়ে সিলিন্ডার নিয়ে আসতে হচ্ছে।
ঘটনা হল, ক্ষুদিরাম এন্টারপ্রাইজের কর্ত্রী হলেন ঝাড়গ্রামের বিধায়ক সুকুমার হাঁসদার স্ত্রী সুষমা হাঁসদা। ডিস্ট্রিবিউটর সংস্থার অফিসটি সুকুমারবাবুর বাড়ির একেবারে লাগোয়া। অসন্তুষ্ট গ্রাহকরা অবশ্য লাইনে দাঁড়িয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে ছাড়ছেন না। বৈতার শ্রীমতী পাল বলেন, “১০ সেপ্টেম্বর অনলাইনে গ্যাস বুকিং করেছি। এক মাস পেরিয়ে গেলেও সিলিন্ডার পাইনি। ভোর বেলা থেকে যাঁরা লাইনে দাঁড়াচ্ছেন তাঁদের দেওয়ার পর সিলিন্ডার ফুরিয়ে যাচ্ছে।” বাছুরডোবার প্রবীণ দীপককুমার চক্রবর্তী বলেন, “হোম ডেলিভারি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গ্যাস না পেয়ে বাড়িতে রান্না লাটে উঠেছে।”
ডিস্ট্রিবিউটর সংস্থাটির ম্যানেজার পঞ্চানন পাতর বলেন, “আইওসিএলের হলদিয়া ও জামশেদপুর প্ল্যান্ট থেকে সিলিন্ডার আসে। ইদানীং পর্যাপ্ত সিলিন্ডার মিলছে না। সিলিন্ডারের গাড়িও অনিয়মিত আসছে। বুকিংয়ের ক্রমিক সংখ্যা অনুযায়ী গ্রাহকদের সিলিন্ডার দেওয়া হচ্ছে। সমস্যার কথা আইওসিএল-এর দুর্গাপুর এরিয়া অফিসের কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনকে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।”
আইওসিএল-র দুর্গাপুর এরিয়া অফিসের সিনিয়র এরিয়া ম্যানেজার অনির্বাণ রায় বলেন, “পুজোর সময় গ্যাসের চাহিদা অত্যধিক বেড়ে যাওয়ার ফলে সাময়িক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে।”