সিলিন্ডার হাল্কা কেন! ক্ষোভে পথে

ঘাটাল শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নিশ্চিন্দপুর থেকে এ খবর চাউর হতে বেশি সময় লাগেনি। ফলে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ল শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:০৬
Share:

গ্যাস সিলিন্ডার ওজন করে দেখছে ঘাটাল থানার পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

কারও দশ দিনে এলপিজি সিলিন্ডার শেষ হয়ে যাচ্ছে। কারও আবার কুড়ি দিনে। ছোট পরিবারে এত অল্প সময়ে তো সিলিন্ডার ফুরোনোর কথা নয়। সন্দেহ দানা বাঁধছিল গ্রাহকদের। সিলিন্ডার ওজন করাতেই হাতেনাতে প্রমাণ। সিলিন্ডার পিছু পাঁচ থেকে ছয় কিলোগ্রাম কম!

Advertisement

ঘাটাল শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নিশ্চিন্দপুর থেকে এ খবর চাউর হতে বেশি সময় লাগেনি। ফলে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ল শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে।

একটি রাষ্ট্রায়ত্ত এলপিজি সংস্থার অফিস রয়েছে শহরের কুশপাতায়। বৃহস্পতিবার সকালে সেখান থেকে একটি পিকআপ ভ্যানে সিলিন্ডার ভর্তি গাড়ি নিশ্চিন্দপুর পৌঁছয়। সেখান থেকে গ্রাহকদের বাড়ি বা়ড়ি সিলিন্ডার পৌঁছনোর কথা। সন্দেহ হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন সিলিন্ডার হাতে পেয়ে ওজন করান। স্থানীয় বাসিন্দা সহদেব খাটুয়া, নকুল খাটুয়ারা বললেন, “সিলিন্ডার ওজন করতেই দেখি পাঁচ-ছয় কিলোগ্রাম করে গ্যাস কম। তখনই স্পষ্ট হয় কারচুপি। এমন কারচুপি কতদিন চলছে কে জানে!’’

Advertisement

কারচুপির অভিযোগ ছড়িয়ে পড়তেই ঘাটাল শহরের দুধের বাঁধ আশ্রম গোড়া, চাউলি, সিংহপুর-সহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রাহকেরা। নিশ্চিন্দপুরে সিলিন্ডার ভর্তি পিকআপ ভ্যানটি আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন গ্রাহকেরা। অভিযোগ, কর্মীদের আটকে রাখা হয়। সংস্থার এক কর্মীকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছয় ঘাটাল থানার পুলিশ। তাদের সামনেই বিক্ষোভ চলে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিও জানানো হয়। পুলিশ সিলিন্ডার ভর্তি গাড়ি বাজেয়াপ্ত করে উপযুক্ত তদন্তের আশ্বাসের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। ঘণ্টা আড়াই ধরে বিক্ষোভ হয়।

সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রায়ত্ত এলপিজি সংস্থার আধিকারিক কিষাণ মনোহর গুপ্ত বলেন, ‘‘ওজন কম থাকলে কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে অভিযোগ জানাতে পারেন গ্রাহকেরা। আমি সংশ্লিষ্ট ডিলারের সঙ্গে কথা বলব।’’ ঘাটাল শহরের ওই এজেন্সির পক্ষে সুকান্ত চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “সিলিন্ডারে গ্যাস কেন কম হল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনায় কোনও কর্মী যুক্ত আছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।”

সিলিন্ডার থেকে কী ভাবে চুরি হচ্ছে গ্যাস?

শহরবাসীদের একাংশের অভিযোগ, ঘরোয়া কাজের এলপিজি সিলিন্ডারগুলি ব্যবহার হচ্ছে হোটেল, রেস্তরাঁয়। এমনকি, চারচাকা গাড়ি এবং অ্যাম্বুল্যান্সও এই এলপিজি সিলিন্ডার দিয়ে চলছে বলে অভিযোগ। গ্রাহকদের অভিযোগ, সিলিন্ডারে কম গ্যাস থাকছে— ডিলারদের কাছে বারবার অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা মেলে না। এমনকি, সিলিন্ডার সরবরাহকারীর কাছে সবসময় ওজন মাপার যন্ত্রও থাকে না বলে অভিযোগ।

ঘাটালের মহকুমা শাসক পিনাকীরঞ্জন প্রধান বলেন, “এমনটা হওয়ার কথা নয়। সিলিন্ডারের গ্যাস কম গুরুতর অপরাধ। ঘটনার তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ঘাটালের মহকুমা পুলিশ অফিসার কল্যাণ সরকার বলেন, “ঘটনার কারা জড়িতদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন