অভাব পানীয় জলের। নেই শৌচাগার। পিকনিক স্পটে আনন্দবাজার

প্রশাসন নয়, ভরসা ব্যক্তিগত উদ্যোগই

ক্ষোভের অন্যতম দু’টি কারণ বিদ্যুৎ পরিষেবা এবং পরিষ্কার শৌচাগারের অভাব।  

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:০৭
Share:

তাজপুরে সৈকতে স্থানীয়দের উদ্যোগে তৈরি শৌচাগার। নিজস্ব চিত্র

গত কয়েক বছর ধরে সাগর পাড়ে পর্যটনের নতুন ঠিকানা তাজপুর। দিঘা বা মন্দারমণির সঙ্গে এখন এক সুতোয় বাঁধা তাজপুর। পুজোর সময় বা শীতের মরসুমে ভিড় এড়াতে বহু পর্যটকই দিঘা, মন্দারমণির পরিবর্তে চলে আসেন এই সৈকতে। আগে পর্যটকদের তেমন ভিড় হত না বলে এখানকার বিভিন্ন পরিষেবা যেমন পানীয় জল, শৌচাগারের সমস্যা সে ভাবে সামনে আসেনি। ক্রমশ এখানে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে। কিন্তু পরিষেবার হাল ফেরেনি। ডিসেম্বরে পর্যটনের ভরা মরসুমেও এই সৈকতে এসে পরিষেবা আর পরিকাঠামো নিয়ে অসন্তোষের শেষ নেই অধিকাংশ পর্যটকের। ক্ষোভের অন্যতম দু’টি কারণ বিদ্যুৎ পরিষেবা এবং পরিষ্কার শৌচাগারের অভাব।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, তাজপুরে বিশ্ববাংলা উদ্যানের কাছে প্রশাসনিকভাবে একটি শৌচাগার বানানো হয়েছে। কিন্তু সেটি খুবই অস্বাস্থ্যকর বলে দাবি পর্যটকদের। তাজপুরের রাস্তার দু’ধারে পথবাতি থাকলেও সন্ধ্যার পরে গোটা এলাকা অন্ধকারে ঢেকে যায়। ফলে আতঙ্কে সন্ধ্যার পরে সৈকতে পর্যটকেরা কেউ বেড়াতে যান না বললেই চলে।

উত্তর ২৪ পরগনার বেলঘরিয়া থেকে এসেছিল আট জনের একটি পর্যটক দল। দলের এক সদস্য সতীনাথ বসু বলেন, ‘‘শৌচকর্ম করার মতো সরকারিভাবে নির্দিষ্ট কোনও জায়গা খুঁজে পাইনি। অনেক কষ্টে যদিও বা একটি পাওয়া যায় তা খুবই নোংরা।’’ স্থানীয় এক বাসিন্দা মৃত্যুঞ্জয় বেরার কথায়, ‘‘পর্যটকদের সুবিধার্থে এলাকার লোকেরা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে এখানে শৌচাগার বানিয়েছেন।’’

Advertisement

শৌচগারের অভাব নিয়ে তালগাছাড়ি-২ পঞ্চায়েতের প্রধান বিশ্বজিৎ জানা বলেন, ‘‘সরকারিভাবে শৌচাগার বানানোর প্রক্রিয়া চলছে। ধাপে ধাপে সব রকমের পরিষেবা এবং পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। এছাড়া, কাচপুর এলাকায় পথবাতি বসানোর কাজ শুরু হয়েছে।’’ পর্যটকদের ক্ষোভ জানার পর রামনগর-১ এর বিডিও বিষ্ণুপদ রায় বলেন, ‘‘এ ধরনের ঘটনা জানা ছিল না। পর্যটকদের সুবিধার্থে পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে।’’

তাজপুরের দু’দিকে আর দুই পর্যটন কেন্দ্র মন্দারমণি ও দিঘায় পিকনিকের পরিকাঠামো নিয়েও অভিযোগ কম নয়। মন্দারমণিতে অনেকেই সমুদ্রের ধারে বিভিন্ন হোটেল সংলগ্ন এলাকায় পিকনিক করেন। অথচ সেখানে প্লাস্টিক বা থার্মোকল নিয়ে কোনও বিধিনিষেধ নেই। ফলে অবাধে চলে দূষণ। তারস্বরে চলে ডিজে। পিকনিকের দল চলে গেলে পড়ে থাকে ফেলে যাওয়া আবর্জনা। এ ছাড়া পানীয় জলের শৌচাগারে সমস্যাও পুরনো। পিকনিকের নির্দিষ্ট জায়গা এখনও সেভাবে না থাকায় দিঘায় ঝাউবনের আনাচে কানাচে পিকনিকের জেরে পরিবেশ নষ্টের অভিযোগ তুলেছেন পরিবেশপ্রেমীরা। অভিযোগ, প্লাস্টিক-থার্মোকল নিষেধে প্রশাসনও সে ভাবে সক্রিয় নয়।

তবে পিকনিকের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলার প্রশাসনিক প্রতিশ্রুতি থাকলেও পরিবেশ দূষণ যাতে না হয় সে দিকে প্রশাসন নজর দিক এটাই দাবি পরিবেশপ্রেমীদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন