সাফাইয়ে হাত লাগালেন জেলাশাসকও। নিজস্ব চিত্র।
শহরের ধারিন্দা রেলগেটের কাছে চায়ের দোকানের পাশেই জঞ্জালের স্তূপ দেখেই এগিয়ে গেলেন জেলাশাসক রশ্মি কমল। দোকানদারকে সটান জিজ্ঞাসা, ‘‘দোকানের পাশে জঞ্জাল পড়ে রয়েছে কেন?’’ কাঁচুমাঁচু সুরে মনোরঞ্জন পাত্রের উত্তর, ‘‘অনেকেই ওখানে নোংরা ফেলে। জঞ্জাল সরানোর দরকার জানি। কিন্তু কোথায় ফেলব জানি না।’’ জেলাশাসকের সঙ্গে থাকা পুরপ্রধান, জঞ্জাল বিভাগের কাউন্সিলরের সামনেই জেলাশাসকের স্পষ্ট নির্দেশ, ‘‘জঞ্জাল এভাবে সড়কের ধারে জমা করা যাবে না।’’
এরপর জেলাশাসক গেলেন কাছেই এক গৃহস্থ বাড়ির উঠোনে। নজরে পড়ল পাকা বসত বাড়ির সামনে আগাছার জঙ্গল। ডাক পেয়ে এলেন বাড়ির মালিক বিবেকানন্দ সাহা। ‘‘আপনার বাড়ির সামনে এমন আগাছার জঙ্গল সাফ হয়নি কেন?’’ বিবেকানন্দবাবুর সাফাই, ‘‘বর্ষার জন্য অনেকদিন আগাছা কাটতে না পারায় এমন হয়ে গিয়েছে। তবে এবার সব পরিষ্কার করে দেব।’’
বুধবার সকালে তমলুক শহরের ১৬ ও ২০ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় পুরসভার জঞ্জাল সাফাই ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে বেরিয়ে এমন ভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল। পুরপ্রধান-সহ কাউন্সিলরদের জেলাশাসকের স্পষ্ট বার্তা, ‘‘যাঁরা আবর্জনা ফেলে রাখবেন, জঞ্জাল সাফাইয়ে সাহায্য করবেন না তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জরিমানা আদায়ের ব্যবস্থা চালু করুন।’’
গ্রামীণ এলাকায় পরিচ্ছন্ন তার নিরিখে দেশের প্রথম দশ জেলার মধ্যে চতুর্থ স্থান লাভ করেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। জেলার গ্রামীণ এলাকার জন্য এই সাফল্যের পর এ বার জেলার সব শহরের পরিচ্ছন্নতা অভিযানে বিশেষ নজর দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এ জন্য জেলা সদর তমলুক পুরসভা এলাকায় জঞ্জাল সাফাই ব্যবস্থাপনার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বুধবার সকালে জেলাশাসক রশ্মি কমল শহরের ধারিন্দা এলাকায় পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনের মাঝে জঞ্জাল সাফাইয়ের কাছে হাতও লাগান তিনি। শহরের দুই ওয়ার্ডের অভিজ্ঞতা নিয়ে জেলাশাসক বলেন, ‘‘জঞ্জাল সাফাইয়ের ক্ষেত্রে কিছু খামতি রয়েছে। শহরের পরিচ্ছনতা বজায় রাখার জন্য নাগরিকদের কর্তব্য নিয়ে সচেতনতার জন্য প্রচার চালানো হবে।’’ তমলুকের পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেন বলেন, ‘‘শহরে জঞ্জাল জমা বন্ধ করতে বাড়ি বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহ পদ্ধতি চালু করে সাফল্য মিলেছে। কিছু ক্ষেত্রে হয়ত তা ঠিকমত হচ্ছে না। তবে সামগ্রিকভাবে আগের চেয়ে শহরের পরিচ্ছনতা বৃদ্ধি পেয়েছে।’’