ধৃত রঞ্জিত শ্রীনাঙ্গ কায়ানগোডে। নিজস্ব চিত্র।
ট্রেন যাত্রীদের টিকিট পরীক্ষা করে জরিমানা আদায়ের কাজটা দিব্যি চলছিল। তবে শেষরক্ষা হল না। হাতেনাতে ধরা পড়ল এক ভুয়ো টিকিট পরীক্ষক। শুক্রবার ডাউন করমণ্ডল এক্সপ্রেস থেকে তাকে পাকড়াও করা হয়। পরে খড়্গপুর রেলের অপরাধদমন শাখা বছর সাতাশের রঞ্জিত শ্রীনাঙ্গ কায়ানগোডে নামে ওই প্রতারককে গ্রেফতার করে। শনিবার তাকে রেল পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
আদতে মহারাষ্ট্রের সাতারা জেলার সুলতানপুরের বাসিন্দা ওই যুবক বালেশ্বর থেকে টিকিট পরীক্ষক সেজে ট্রেনে উঠেছিল। রেলের অপরাধদমন শাখার কাছে গোপন সূত্রে সেই খবর পৌঁছয়। করমণ্ডল এক্সপ্রেস খড়্গপুরে পৌঁছলে শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ তাকে পাকড়াও করা হয়।
খড়্গপুর রেলের অপরাধদমন শাখার ওসি শিশিরকুমার দাস বলেন, “ধৃতের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্যই ওই যুবককে রেল পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।’’ এর পিছনে কোনও চক্র রয়েছে কিনা তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, রঞ্জিত গত ডিসেম্বর থেকেই বালেশ্বরের একটি হোটেলে থাকছিল। প্রতিদিন খড়্গপুর থেকে বালেশ্বর রুটের বিভিন্ন ট্রেনে উঠে টিকিট পরীক্ষক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছিল। টিকিট থাকলেও যাত্রীদের নানাভাবে হেনস্থা করে জরিমানা আদায় করাই ছিল তার আসল উদ্দেশ্য। টিকিট পরীক্ষকের সাজ-পোশাক দেখে অনেক যাত্রী টাকা দিয়েও দিতেন। ক্রমে খবর পৌঁছয় রেল কর্তৃপক্ষের কাছে। তারপর ওই যুবকের উপর নজর রাখা হচ্ছিল। শুক্রবার বালেশ্বর স্টেশন থেকে ওই যুবক হাওড়াগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসে উঠেছে বলে গোপন সূত্রে জানতে পারে রেলের অপরাধদমন শাখা। ট্রেনটি খড়্গপুরে পৌঁছতেই ওই যুবককে পাকড়াও করে রেলের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স ও অপরাধদমন শাখার আধিকারিকেরা।
রেলের অপরাধদমন শাখা সূত্রে খবর, ওই দিন দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলছিল। সেই সময় একটি নিয়োগপত্র দেখিয়ে নিজেকে আসল টিকিট পরীক্ষক হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা করে ওই যুবক। ওই নিয়োগপত্র অনুযায়ী রেল গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর তাকে টিকিট পরীক্ষকের পদে নিযুক্ত করা করেছে বলে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু রেলের রেকর্ড খতিয়ে দেখ যায়, ওই নামে কাউকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি। শুক্রবার রাতে রেলের অপরাধদমন শাখার আধিকারিকেরা ওই যুবককে গ্রেফতার করেন। তার কাছে জাল নিয়োগপত্র ছাড়াও একটি জাল পরিচয়পত্র, ৩টি মোবাইল পাওয়া গিয়েছে। সেগুলি বাজেয়াপ্ত হয়েছে।