রেলমাফিয়া শ্রীনু নায়ডু খুনে রেলশহরের আর এক ডন বাসব রামবাবুকেই মূল চক্রী হিসেবে চার্জশিটে দেখিয়েছে পুলিশ। আর এ ক্ষেত্রে পুলিশের ভরসা, নন্দর মুখে রাম-নাম!
শনিবার মেদিনীপুর আদালতে জমা দেওয়া শ্রীনু মামলার ১৬ পাতার চার্জশিটের ৭ নম্বর পাতায় জানানো হয়েছে, এই মামলায় ধৃত নন্দ দাস গোপন জবানবন্দিতে সে জানিয়েছে, রামবাবুই কয়েকজন শাগরেদকে নিয়ে শ্রীনুকে খুনের পরিকল্পনা করে। সেই ছক কষতে অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনমে এবং খড়্গপুরে দফায় দফায় বৈঠক হয়। চার্জশিটে যে এই বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে তা মানছেন মামলার বিশেষ সরকারি আইনজীবী সমরকুমার নায়েকও।
ঘটনার ৮৭ দিনের মাথায় শনিবার মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে শ্রীনু হত্যা মামলার চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ। চার্জশিটে ১৪ জনের নাম রয়েছে। এর মধ্যে রামবাবু সহ ১৩ জন ধরা পড়েছে। শুধু কে কাশী রাও এখনও পলাতক। গত ফেব্রুয়ারিতে অন্ধ্রপ্রদেশের তানুকা থেকে রামবাবুকে গ্রেফতার করে আনার পরেই পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ দাবি করেছিলেন, শ্রীনু হত্যায় ‘বড় মাথা’ রামবাবুই। মামলার চার্জশিটেও সেই মতো দাবি করা হয়েছে, শ্রীনুকে খুন করে খড়্গপুরে ফের মাফিয়ারাজ ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিল রামবাবু।
শ্রীনু হত্যা মামলায় যে ১৩ জন গ্রেফতার হয়েছে তার মধ্যে নন্দ অন্যতম। সে এখন জেল হেফাজতে রয়েছে। গ্রেফতারের পরপরই আদালতে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার কথা ছিল নন্দর। কিন্তু প্রথমবার বিচারকের কাছে গিয়ে বেঁকে বসে নন্দ। তার পরদিনই পুরনো ডাকাতির মামলায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সেই সময়ে নন্দর দাবি ছিল, গোপন জবানবন্দি দিতে রাজি না হওয়ায় তাকে ডাকাতির মামলায় ফাঁসানো হচ্ছে। দিন কয়েকের মধ্যেই অবশ্য ভোলবদল করে নন্দ। নিজেই গোপন জবানবন্দি দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করে। সেই জবানবন্দিতে নন্দর মুখে রাম-নাম উঠে আসে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। এরপর রামবাবুকে ধরতে ঘুঁটি সাজাতে শুরু করে পুলিশ।