—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
নেহাত দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়নি। বরং পরিকল্পনা করে নাবালককে খুন করা হয়েছে। দাঁতনকাণ্ডের তদন্তে নমে এমনটাই মনে করছেন তদন্তকারীরা। ১৩ বছরের ইকবাল বক্সের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে কাকা এবং সৎমাকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ বার মুম্বই থেকে দাঁতনে এসে পুলিশের কাছে অভিযোগ করলেন নাবালকের মা। তাঁর দাবি, ছোট ছেলেকে খুন করা হয়েছে।
ইকবালের আকস্মিক এবং অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় গত কয়েক দিন ধরেই শোরগোল চলছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন-২ ব্লকের তুরকা গ্রামে। গত শনিবার সকালে বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ওই ছাত্রের নলিকাটা দেহ। সৎমা সানোয়ারা বিবি দাবি করেন, সিলিং ফ্যানের ব্লেডে গলা কেটেছে নাবালকের। ঘুমের ঘোরে খাটে দাঁড়িয়ে পড়ার ফলেই ওই দুর্ঘটনা। যদিও তদন্তের প্রথম থেকে ওই ‘তত্ত্ব’ বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি পুলিশের। তারা টানা জিজ্ঞাসাবাদের পর সানোয়ারাকে গ্রেফতার করে। পরে পাকড়াও হন নাবালকের কাকা বাপুজি বক্স।
জানা যাচ্ছে, বিবাহবিচ্ছেদের পরে সানোয়ারাকে বিয়ে করেন ইকবালের বাবা রবিউল। কর্মসূত্রে রবিউল থাকেন ভিন্রাজ্যে। তদন্তকারীদের অনুমান, সৎমা এবং কাকার ‘ঘনিষ্ঠতা’ দেখে ফেলায় খুন করা হয় ছেলেটিকে। খুনের ঘটনা ঢাকতে গিয়ে সিলিং ফ্যানের ব্লেডে গলা কেটে যাওয়ার ‘তত্ত্ব’ দেন সৎমা। একই কথা বলেন ছেলেটির কাকা। ইতিমধ্যে ধৃতদের ১৪ দিনের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ।
এর মধ্যে ইকবালের মা খুশবু বিবি থানায় অভিযোগ করেছেন। ওই মহিলা জানান,স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পরে বড় ছেলেকে নিয়ে তিনি মুম্বইয়ে থাকেন। ছোট ছেলে থাকত বাবার কাছে। একটি মাদ্রাসা স্কুলে আবাসিক ছাত্র ছিল ইকবাল। খুশবুর বিশ্বাস, ছেলের মৃত্যুতে স্বামীর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর হাত রয়েছে।
পুলিশ জানাচ্ছে, গত সপ্তাহে হস্টেল থেকে বাড়ি ফিরেছিল ইকবাল। আবার গত সপ্তাহেই চেন্নাই থেকে বাড়ি ফেরে ইকবালের কাকা বাপুজি। বাড়িতে একটি অনুষ্ঠান ছিল। তার মধ্যেই মৃত্যু হয়েছে নাবালকের। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা খুনের অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছি। মনে করা হচ্ছে, সৎমা এবং কাকার অবৈধ সম্পর্ক জেনে যাওয়ায় ছেলেটিকে খুন করা হয়েছে। তবে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র এখনও উদ্ধার করা যায়নি। ধৃতদের জেরা চলছে। আশা করছি, শীঘ্রই এই মামলার রহস্যভেদ হবে।’’