পুজোয় অটো, টোটোয় রাশ টানার ভাবনা

মেদিনীপুর শহর ছাড়াও শহরতলি এলাকায় ৫০০-এরও বেশি অটো চলে। টোটো চলে দেড় হাজারেরও বেশি। অভিযোগ, এর মধ্যে অনেক অটো-টোটো বেপোরোয়া ভাবে চলাচল করে। গতিতে নিয়ন্ত্রণে থাকে না। ফলে, যে কোনও মুহূর্তে বিপদের সম্ভাবনা থাকে। নির্দিষ্ট রুট আর পারমিট ছাড়াই অধিকাংশ টোটোও শহরে দাপিয়ে বেড়ায় বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:৩৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

অটো-টোটোর ফাঁসে যানজটে ভোগান্তি মেদিনীপুর শহরের নিত্যদিনের ঘটনা। শহরে আলাদা পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তায় যেখানে সেখানে দাঁড়িয়েই অটো-টোটো যাত্রী তোলে বলে অভিযোগ। পুজোর সময় শহরে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে অটো-টোটো নিয়ন্ত্রণ করতে পারে পুলিশ।

Advertisement

মেদিনীপুর শহর ছাড়াও শহরতলি এলাকায় ৫০০-এরও বেশি অটো চলে। টোটো চলে দেড় হাজারেরও বেশি। অভিযোগ, এর মধ্যে অনেক অটো-টোটো বেপোরোয়া ভাবে চলাচল করে। গতিতে নিয়ন্ত্রণে থাকে না। ফলে, যে কোনও মুহূর্তে বিপদের সম্ভাবনা থাকে। নির্দিষ্ট রুট আর পারমিট ছাড়াই অধিকাংশ টোটোও শহরে দাপিয়ে বেড়ায় বলে অভিযোগ।

জেলার এক পুলিশ কর্তার কথায়, “আগে শহরে এত টোটো ছিল না। সম্প্রতি শহরে প্রচুর টোটো নেমেছে। তাই পুজোর দিনগুলোয় যানজট এড়াতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সমস্ত দিক খতিয়ে দেখেই বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হবে।” জেলা পুলিশের এক কর্তাও মানছেন, “এ বার পুজোয় শহরকে সচল রাখাটা একটা চ্যালেঞ্জই!” ঠিক কী কী পদক্ষেপ করার কথা ভাবছে পুলিশ? পুজোর দিনগুলোয় শহরে অটো-টোটো-লোটো চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হতে পারে। বিকেল ৫টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত শহরের মধ্যে এ সব চলবে না।

Advertisement

জেলা পুলিশের এক সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে প্রাথমিক একটা রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। শহরে গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার কথা ভাবা হয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় যেমন পার্কিং জোন হবে, তেমনই বেশ কিছু এলাকায় নো-এন্ট্রিও করা হবে। মেদিনীপুর শহরে ৫টি পুলিশ অ্যাসিস্ট্যান্ট বুথ খোলা হতে পারে। কালেক্টরেট মোড়, কেরানিতলা, পঞ্চুরচক, রাঙামাটি- এই সব এলাকায় পুলিশ অ্যাসিস্ট্যান্ট বুথ থাকতে পারে। এই সব বুথে সব সময় পুলিশ কর্মীরা থাকবেন। প্রাথমিক ভাবে মেদিনীপুর শহরের ১০টি বড় পুজোকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যানজট সমস্যা এড়াতে এই সব পুজো মণ্ডপের আশপাশে বিশেষ পুলিশি ব্যবস্থা থাকবে।

পুজোর শহরে সাদা পোশাকের পুলিশও মোতায়েন থাকবে। জেলা পুলিশের এক সূত্রে খবর, মেদিনীপুর শহরে সবমিলিয়ে ৩৩টি মোড়ে পুলিশ মোতায়েন থাকার কথা। ৪টি পার্কিং জোন থাকতে পারে। পুজোর দিনগুলোয় শহরে লরি, বাস ও অন্য চারচাকার গাড়ি ঢোকা-বেরোনোর ক্ষেত্রে কিছু নিষেধাজ্ঞা থাকবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মালবাহী ভারী গাড়ি ঢুকবেই না। মেদিনীপুর শহরে ৫টি মোবাইল মোটরবাইকও থাকার কথা।

জেলা পুলিশের ওই সূত্র জানাচ্ছে, পুজোর দিনগুলো নির্বিঘ্ন রাখতে সম্প্রতি পুলিশ-কর্তাদের নিয়ে মেদিনীপুরে এক বৈঠকও করেছেন জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। সেখানে শহরের পুলিশি ব্যবস্থা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। মেদিনীপুর শহরে শতাধিক সর্বজনীন দুর্গাপুজো হয়। এক সময় বড় বাজেটের পুজোতেই বেশি ভিড় হত। ছবিটা এখন বদলেছে। ভিড় টানার নিরিখে এগিয়ে থাকছে ছোট বাজেটের পুজোগুলোও। এই সময়ের মধ্যে শহরের প্রায় কোথাও সে ভাবে রাস্তা সম্প্রসারণ হয়নি। ফলে, অটো-টোটোর দাপটে যানজটে হাঁসফাঁস করে শহর। পুজোয় সমস্যা এড়াতে তাই অটো-টোটোর চলাচল নিয়ন্ত্রণের কথা ভাবছে পুলিশ।

মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষ বলেন, “কিছু সমস্যা রয়েছে। সমস্যার কথা অজানা নয়। পুজোয় শহর সচল রাখার সব রকম চেষ্টা চলছে। পুলিশ বিষয়টি দেখছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন