পুজোয় যানজটের অসুর বধ করে স্বস্তিতে পুলিশ! শান্তিতে ঠাকুর দেখতে পেরে খুশি শহরের বাসিন্দারাও।
যানজটে সাধারণ দিনে যে পথ যেতে আধঘণ্টা লাগে, পুজোয় সেই রাস্তায় গাড়ির লাইন উধাও! বাইকে আত্মীয় পরিজন নিয়ে দিব্যি ঠাকুর দেখলেন শহরবাসী। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলি ফাঁকা দেখে অবাক বাইরে থেকে আসা দর্শনার্থীরাও। অটো-টোটো নিয়ন্ত্রণ করেই এই সাফল্য মিলল বলে দাবি পুলিশের।
পুজোর ক’দিন দুপুর থেকে শহরে অটো-টোটো চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল পুলিশ। এ ছাড়াও শহরকে যানজট মুক্ত রাখতে প্রয়োজন মতো সিপাইবাজার, কুইকোটা বা আবাসের কাছে গাড়িও আটকে দেওয়া হয়েছে। দূরে গাড়ি রেখেই মণ্ডপে ঢুকতে হওয়ায় অনেকে বিরক্ত হয়েছেন ঠিকই। কিন্তু যানজট থেকে মুক্তি মেলায় দিনের শেষে স্বস্তির হাসি সকলের মুখেই।
গ্রামগঞ্জ থেকে আসা দর্শনার্থীরাও নিশ্চিন্তে ঘুরেছেন মণ্ডপ থেকে মণ্ডপে। কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা হয়নি, এমন নয়। যানবাহন না থাকায় শহরের একপ্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তে যাতায়াতে কষ্ট হয়েছে বৃদ্ধবৃদ্ধা, ছোট বাচ্চাদের। দর্শনার্থীরাই জানাচ্ছেন, অটো-টোটো চললে হয়তো হাঁটার কষ্টটা সহ্য করতে হত না। কিন্তু যানজটে এক প্যান্ডেল থেকে অন্য মণ্ডপে যেতে দীর্ঘ সময় লেগে যেত। সারা রাত ঘুরেও সব ঠাকুর দেখা সম্ভব হত না। সেখানে পায়ে হেঁটে এক মণ্ডপ থেকে অন্য মণ্ডপে ৫-১০ মিনিটেই চলে যাওয়া গিয়েছে।
শহরের জগন্নাথমন্দির এলাকার বাসিন্দা সরকারি আধিকারিক সৌরভ দত্ত টোটো ভাড়া করে মা, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে প্রতিমা দেখতে যাবেন বলে ভেবেছিলেন। অটো-টোটো না চলায় মোটরবাইকে দু’বারে সকলকে নিয়ে বেরোন। তাঁর কথায়, “দু’বার যেতে হলেও এ বার পুজোয় ঘোরাটা উপভোগ করেছি। যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থেকে হাঁসফাঁস করতে হয়নি।”
শালবনির চকতারিনী এলাকা থেকে স্ত্রী, পুত্রকে নিয়ে মেদিনীপুর শহরে ঠাকুর দেখতে এসেছিলেন সুশান্ত মালস। প্রতি বছর হেঁটেই ঠাকুর দেখেন তিনি। এ বার মেদিনীপুর স্টেশন থেকে বেরিয়ে রাস্তা ফাঁকা দেখে একটু অবাকই হয়েছিলেন সুশান্তবাবু। পাশের এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করলেন, রাস্তায় ভিড় নেই কেন? রাস্তায় অটো-টোটো নেই মনে করিয়ে দিতেই সম্বিত ফিরে পেলেন তিনি। বললেন, “ওহ্, তাই তো যানজট নেই। না হলে অলিগলি দূরের কথা, বড় রাস্তা পার হতেও সময় লেগে যেত।”