Pradhan Mantri Awas Yojana

আবাসে উপভোক্তাদের তালিকা ফের যাচাই

কেন্দ্রীয় দল গিয়েছিল নন্দকুমারের কুমরচক গ্রামপঞ্চায়েতের কুমরচক গ্রামে। সে সময় বাসিন্দারা কেন্দ্রীয় দলের কাছে অভিযোগ করেন, আবাস প্লাসে উপভোক্তা তালিকায় পাকা বাড়ির মালিকরাও রয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

তমলুক শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৩ ০৯:১০
Share:

কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক। — ফাইল চিত্র।

আবাস যোজনায় পাকা বাড়ি প্রাপক উপভোক্তাদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হতেই পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ সামনে এসেছে। অনেকের অভিযোগ, তাঁদের কাঁচাবাড়ি হওয়া সত্ত্বে্ও আবাস তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। আবার পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও আবাস তালিকায় নাম রয়েছে।

Advertisement

এমন ক্ষোভ-বিক্ষোভের আবহে গত বৃহস্পতিবার, শুক্রবার কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের তিন আধিকারিককে নিয়ে গঠিত দল দু’দিন ধরে ভগবানপুর, খেজুরি, নন্দকুমার ও তমলুক ব্লকের বিভিন্ন স্থানে পরিদর্শনে যান। কেন্দ্রীয় দলের পরিদর্শনের প্রথম দিনেই সিপিএমের জেলা নেতৃত্বের তরফে জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় দলের কাছে জেলার ২৫টি ব্লকের মধ্যে ১৪টি ব্লকের আবাসের চূড়ান্ত তালিকায় থাকায় বাড়ির প্রাপকদের নামের তালিকা-সহ স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল। শুক্রবার কেন্দ্রীয় দল গিয়েছিল নন্দকুমারের কুমরচক গ্রামপঞ্চায়েতের কুমরচক গ্রামে। সে সময় বাসিন্দারা কেন্দ্রীয় দলের কাছে অভিযোগ করেন, আবাস প্লাসে উপভোক্তা তালিকায় পাকা বাড়ির মালিকরাও রয়েছেন। অথচ কাঁচাবাড়িতে বাস করা পরিবারের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব কুমরচক পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামের আবাস প্লাস প্রকল্পে উপভোক্তাদের চূড়ান্ত তালিকায় পাকাবাড়ির মালিকদের নাম চিহ্নিত করে কেন্দ্রীয় দলের আধিকারিকদের হাতে তুলে দেন।

আর তাতেই অস্বস্তিতে পড়ে যায় জেলা প্রশাসন, মহকুমা ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা। যদিও জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি দাবি করেছিলেন, সবকিছুই ঠিক আছে। আবাস নিয়ে জেলা প্রশাসনের কাজে তিনি ‘কনফিডেন্ট’। জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় দলের কাছে অভিযোগ জানানোর পরে শনিবার থেকে নন্দকুমার ব্লক প্রশাসনের তরফে কুমরচক পঞ্চায়েতের চূড়ান্ত উপভোক্তা তালিকায় থাকা পাকাবাড়ির মালিকদের বিষয়ে ফের তদন্ত শুরু হয়েছে। পঞ্চায়েতের রাজারামপুর গ্রামে শনিবার ব্লক প্রশাসনের তরফে তদন্ত হয়েছে। তবে শুধু নন্দকুমার ব্লক নয়, জেলার অন্যান্য ব্লকেও প্রশাসনের তরফে আবাস প্লাসের চূড়ান্ত উপভোক্তা তালিকায় থাকা পাকাবাড়ির মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। তাতে একাংশ উপভোক্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হওয়ায় তালিকা থেকে সেই নাম বাদও দেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, আবাস প্লাস প্রকল্পে পূর্ব মেদিনীপুরে প্রথম দফায় ৫৩ হাজার ৪০০ পরিবারের পাকাবাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে চূড়ান্ত তালিকায় থাকা একাংশ পরিবারের পাকাবাড়ি থাকা সত্ত্বেও তালিকায় নাম থাকার অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে বিজেপি, বামফ্রন্ট অভিযোগ তোলার পাশাপাশি এলাকার বাসিন্দারাও অভিযোগ জানাচ্ছেন প্রশাসনের কাছে। এ জন্য জেলা প্রশাসনের তরফে সমস্ত ব্লক প্রশাসনকে তালিকা দেওয়া হয়েছে । শনিবার থেকে ওই তদন্ত হচ্ছে। চূড়ান্ত উপভোক্তা তালিকায় থাকা একাংশে ‘রেজিস্ট্রেশন’ হওয়ার পরেও তাঁদের পাকাবাড়ি থাকার প্রমাণ মেলায় তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

নন্দকুমার ব্লকের বিডিও শানু বক্সী বলেন, ‘‘আবাস প্লাসের চূড়ান্ত তালিকায় থাকা একাংশ উপভোক্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে পাকাবাড়ি থাকা সত্ত্বেও আবাস তালিকায় নাম রয়েছে। ব্লকে এরকম প্রায় ৬০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। তবে আগে থেকেই এর তদন্ত হচ্ছে। কেন্দ্রীয় দলের কাছে অভিযোগের পরে তদন্ত হচ্ছে এমনটা ঠিক নয়।’’ তমলুক ব্লকের বিডিও সৌমেন মণ্ডল বলেন, ‘‘চূড়ান্ত উপভোক্তা তালিকায় থাকা পরিবারের একাংশের বিরুদ্ধে পাকাবাড়ি থাকার অভিযোগ এসেছিল। ব্লকে এরকম ১৮০টি অভিযোগ নিয়ে তদন্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৬২টি পরিবারের নাম আগেই বাদ পড়েছিল। ফের তদন্তের পরে আরও ১১টি পরিবারের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে কিছুক্ষেত্রে অভিযোগের সত্যতা মেলেনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন