ইফতারের খাওয়াদাওয়া। মেদিনীপুরের অলিগঞ্জে দেওয়ান খাস মসজিদে। সৌমেশ্বর মণ্ডলের তোলা ছবি।
রমজান মাস পড়তে না পড়তেই ফলের বাজার আগুন।
যে আপেল কিলো প্রতি ১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছিল দু’দিন আগেও, মঙ্গলবার রমজান শুরু হতেই তা এক লাফে বেড়ে দাঁড়িয়েছে কিলো প্রতি ১৮০-২০০ টাকা। ২০ টাকা ডজনের কলা দাম হয়েছে ৫০-৬০ টাকা। দাম চড়েছে শশা, কলা, মুসম্বি পেয়ারা-সহ সব ধরনের ফলের। ফলে চূড়ান্ত বিপাকে পড়ছেন সাধারণ ক্রেতারা।
মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে রমজান মাস। এই সময়টা মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মপ্রাণ মানুষ দিনভর রোজা অর্থাৎ উপবাস করেন। সূর্যাস্তের পরে নিয়ম মেনে ফলাহার করে উপবাস ভঙ্গ করা হয়। কিন্তু ফলের দাম যে হারে বেড়েছে তাতে অনেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণ ফল কিনতে পারছেন না। মেদিনীপুর টাউন মুসলিম কমিটির সভাপতি হাজি মিরাজের অভিযোগ, “এই সময় ফলের চাহিদা বাড়ে। সেই সুযোগে ব্যবসায়ীরা বেশি মুনাফার চেষ্টা করছেন। বিষয়টি প্রশাসনের দেখা উচিত।’’
আপেল, কলা, পেয়ারা, পেঁপে, বেদানা, খেজুর, আম কিনতে গিয়ে মেদিনীপুরের অনেক মানুষেরই হাত পুড়ছে। সৈয়দ আব্দুল ফারুক যেমন বললেন, “তিনদিন আগেও প্রতি কিলো ৭০-৮০ টাকায় লিচু পেয়েছি। এখন দাম বলয়েছে ১২০ টাকা!” একই সুরে তালেবুল হোসেনের কথায়, ‘‘১২০ টাকা কিলোর আপেল ছিল এখন ১৮০-২০০ টাকার নীচে পাওয়া যাচ্ছে না। রমজান মাস শুরু হতেই ফলের দাম দেড় থেকে দু’গুণ বেড়ে গিয়েছে। সাধারণ-মধ্যবিত্ত মানুষ ফল কিনবেন কী ভাবে!”
ফল বিক্রেতাদের অবশ্য দাবি, তাঁদেরও এখন চড়া দামে ফল কিনতে হচ্ছে। ফলে কমে তা বিক্রি করা সম্ভব নয়। মেদিনীপুরের বটতলা চকের ফল বিক্রেতা চুনারাম শ্যামলের কথায়, “রমজান মাসে দেশ জুড়ে ফলের চাহিদা বাড়ে। আমাদেরই যদি বেশি দামে ফল কিনতে হয়,
তাহলে আর কী ভাবে কম দামে ক্রেতাদের দেব!”
সব ফলই চলে গিয়েছে নাগালের বাইরে। ক্রেতারা নাস্তানাবুদ। আশঙ্কা, পরে আরও দাম বাড়তে পারে। এই সূযোগকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে আরও দাম বাড়িয়ে দিতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, কৃত্রিম সঙ্কট দেখিয়ে দামের অতিরিক্ত বৃদ্ধি ঘটালে পদক্ষেপ করা হবে।