চৈতন্যপুরের মাছের বাজারে। নিজস্ব চিত্র
বছরে তো একটাই দিন। ভাইয়ের পাতে ভাল মাছের পদ তুলে দিতে না পারলে চলে। কিন্তু বাজার দর যা, তাতে পছন্দমতো মাছ কিনতে গিয়ে হোঁচট খেলেন দিদিরা।
টাউনশীপের ব্রজনাথচকের বাসিন্দা প্রমিলা সাউের ভাই পড়াশোনার জন্য দুর্গাপুরে থাকেন। শুক্রবার সাত সকালে মাছ কিনতে প্রমিলা হাজির হয়েছিলেন বাজারে। ইচ্ছে ছিল, চিতল মাছ কেনার। কিন্তু চড়া দরে শেষপর্যন্ত কেনা হল না চিতল মাছ। প্রমিলার কথায়, ‘‘ফোঁটার জন্য ভাইকে এখানে ডেকে এনেছি। কিন্তু মাছের দর যা তাতে ভাই এর পাতে কী দেব তা ভেবে পাচ্ছি না।’’
হলদিয়ার একাধিক বাজারে এ দিন মাছের দর ছিল বেশ চড়া। টাউনশিপের মাখন বাবুর বাজারে ভেটকি মাছ বিকিয়েছে সাড়ে চারশো টাকা, গলদা সাতশো, বাগদা আটশো, মৌরলা মাছ ছশো, পমফ্রেট ছশো টাকা কেজি দরে। শুধু হলদিয়ার মাখনবাবুর বাজার নয়, মোহনা মার্কেট, এবং মঞ্জুশ্রী এলাকায় দুর্গাচক সুপার মার্কেট, কলোনি বাজার, চৈতন্যপুরের মতো সব বাজারে মাছের দাম কপালে ভাঁজ ফেলে দিয়েছে দিদি ও ভগ্নীপতিদের। দাম চড়া। তবু শিল্প শহরের বাজারগুলিতে ভোর থেকেই মাছ কেনার জন্য ভিড় ছিল। মাখনবাবুর বাজারের এক মাছ ব্যবসায়ী শম্ভু মণ্ডল বলেন, ‘‘এক ঝুড়ি পমফ্রেট মাছ নিয়ে এসেছিলাম। যা অবস্থা বেলা দশটার আগেই ঝুড়ি ফাঁকা হয়ে যাবে।’’ তাপসী চক্রবর্তী নামে হলদিয়ার খঞ্জনচকের এক বাসিন্দা কথায়, ‘‘ভাগাড় কাণ্ড নিয়ে মাস কয়েক আগে হইচই তো কম হয়নি। তাই এখনও ঠিক ভরসা কুলোয় না। তাই ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় যে ভাইফোটা, তাতেই কেন মাংস খাওয়ানোর ঝুঁকি নেব! ’’
তবে ক্রেতাদের একাংশের অভিযোগ, সুযোগ বুঝে এদিন দর বাড়িয়ে রাখা হয়েছিল। চৈতন্যপুরের বাসিন্দা অজয় মল্লিকের কথায়, ‘‘রোজ মাছ নিয়ে যাই। কিন্তু এদিন একই মাছ কিলোগ্রাম পিছু পঞ্চাশ টাকা বেশি নিচ্ছে।’’ অভিযোগ মানতে রাজি নন ব্যবসায়ীরা। বাসুদেব বর্মন নামে এক ব্যবসায়ীর দাবি, ‘‘হলদিয়া ও আশেপাশের বাজারে মাছের খুব চাহিদা ছিল। জোগান কম হওয়ার জন্য দাম বেড়েছে। ইচ্ছাকৃত দাম বাড়ানোর অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’