জোরকদমে: চলছে মণ্ডপ সজ্জার কাজ। নিজস্ব চিত্র
বন্ধ সিনেমা হলেই আস্ত মণ্ডপ!
অবাক হওয়ার কিছু নেই। খড়্গপুরের পুরাতনবাজারে শীতলা সিনেমা হলের ভিতরে ঢুকলেই মনে হতেই পারে, সমুদ্রের জলের তলার এ কোন আজব দুনিয়া। ৭২তম বর্ষে পুরাতনবাজার দুর্গা-লক্ষ্মী-কালী পুজো কমিটির দুর্গাপুজোর এ বারের থিম ‘সমুদ্রের তলদেশে জলপরীর দেবীবরণ’।
বছর খানেক ধরেই বন্ধ শীতলা সিনেমা হল। একসময় নতুন করে এই হলকে সাজিয়ে দর্শক টানার চেষ্টা করেছিলেন শহরের আর এক সিনেমা হল বোম্বে সিনেপ্লেক্সের মালিক। কিন্তু সুফল মেলেনি। এই হলেই প্লাই, পুট্টি, প্লাস্টিকের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে সমুদ্রের তলদেশ। হলের মাঝখানে থাকবে জলপরী। সিনেমাহলের যে মঞ্চে পর্দা থাকে সেখানে থাকবে একচালার সাবেক দুর্গা প্রতিমা। থিমের মণ্ডপসজ্জা থেকে মূর্তি তৈরি সব কাজই চলছে
সিনেমাহলের ভিতরে। পুজোর বাজেট প্রায় ১০ লক্ষ টাকা।
কেন হঠাৎ সিনেমা হলে পুজোর আয়োজন? উদ্যোক্তাদের দাবি, দীর্ঘদিন রেই এই সিনেমাহলের ভিতরে দুর্গাপুজো হত। তবে বাজেট কম হওয়ায় পুজো হত ছোট করে। সে জন্য দুর্গাপুজোর দিন পনেরো আগে সিনেমা দেখানো বন্ধ করে সব কিছু আয়োজনের জন্য পুজো কমিটির হাতে ছেড়ে দেওয়া হত হল। তাই ১৫ দিনেই সব কাজ করতে হওয়ায় রকমারি থিম ফুটিয়ে তোলা সম্ভব হত না। এ বার হলের ভিতরেই পুজো করার সুযোগ মেলায় খুশি উদ্যোক্তারা। থিমের মণ্ডপ গড়তে বাড়ানো হয়েছে বাজেটও।
পুজো কমিটির কর্মকর্তা মানস পালের কথায়, “শীতলা সিনেমা হলটি আমাদের পুজো কমিটিরই। বাংলা সিনেমার বাজার ভাল না হওয়ায় হলটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এতবছর ১৫ দিনের মধ্যে সব কিছু আয়োজন করে পুজো করতে হত বলে থিমের মণ্ডপ গড়ার সুযোগ ছিল না।’’ একইসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘বছর খানেক ধরে সিনেমাহল বন্ধ থাকায় এ বার হলের ভিতরে বড় করেই পুজোর আয়োজন হবে। আশা করি আমাদের থিম দর্শকদের ভালই লাগবে।”
সিনেমা হলে থিমের পুজো কেমন হবে, তা নিয়ে উৎসাহী অনেকেই। শহরের সিনেমাপ্রেমী কুন্তল দাস বলছেন, “ছোটবেলায় শীতলা সিনেমাহলে বহু সিনেমা দেখেছি। তাই পুজোয় সিনেমাহলে সমুদ্রগর্ভ দেখাটা বেশ অন্যরকম হবে বলেই মনে হচ্ছে!”