পরিষেবা না পেলে শাস্তির নিদান

সরকারি অফিস থেকে জরুরি কাগজ গুছিয়ে বের করে আনাটা রীতিমতো ‘শিল্প’— অভিযোগ সাধারণ মানুষের। তা সে জন্মের শংসাপত্র হোক বা মৃত্যুর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৫৪
Share:

সরকারি অফিস থেকে জরুরি কাগজ গুছিয়ে বের করে আনাটা রীতিমতো ‘শিল্প’— অভিযোগ সাধারণ মানুষের। তা সে জন্মের শংসাপত্র হোক বা মৃত্যুর। নতুন রেশন কার্ড হোক বা ভোটার কার্ডের সংশোধন— দীর্ঘসূত্রিতার শেষ নেই সরকারি দফতরে। ‘কাল আসুন, পরশু ছুটি, এখন টিফিন, বড়বাবু আসেননি’— জর্জরিত আমজনতা। অভ্যস্তও বলা যায়। কিন্তু এমনটা যে হওয়ার কথা নয়। জানেন না তাঁরা। জানেন না সরকারি আধিকারিকরাও।

Advertisement

২০১৩ সালের জন পরিষেবা আইনে, যে কোনও কাজের ক্ষেত্রে আবেদন করার পর পরিষেবা দেওয়ার বিষয়ে সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সঠিক সময়ে পরিষেবা দিতে না-পারলে সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের লিখিতভাবে কারণ দেখাতে হবে। না-পারলে শাস্তির নিদানও রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের পদস্থ এক কর্তার বলেন, “নিয়ম রয়েছে। কিন্তু সরকারি বেশিরভাগ দফতরেই ঠিকঠাক ভাবে পরিষেবা পান না সাধারণ মানুষ। উপভোক্তাকে সচেতন করাটা খুব জরুরি।’’ কেমন অধিকার পাবেন উপভোক্তা?

Advertisement

জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধীকরণ: মৃত্যুর পাঁচ ঘণ্টা পরই মৃত্যুর শংসাপত্র হাতে পেয়ে যাবেন পরিবারের লোকজন। জন্মের পরেও নিয়ম মেনে আবেদন করার দু’দিনের মধ্যেই শংসাপত্র দিতে বাধ্য স্বাস্থ্য দফতর।

জমি কেনাবেচা: জমির দাগের তথ্য বা নাম পরিবর্তনের জন্য যদি কেউ সঠিক ভাবে আবেদন করেন, তবে দু’দিনের মধ্যে সার্টিফায়েড কপি তুলে দিতে হবে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে।

রেশন কার্ড: জন পরিষেবা আইনে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, নতুন রেশন কার্ড বা পুরনো কার্ড সংশোধনের জন্য খাদ্য দফতরে আবেদন করলে এক মাসের মধ্যেই উপভোক্তাদের হাতে নতুন বা সংশোধিত কার্ড তুলে দিতে হবে। ঠিকানা পরিবর্তনের জন্য আবেদন করলে ১৫ দিনের মধ্যে তা করে দিতে হবে খাদ্য দফতরকে।

জাতিগত শংসাপত্র: আবেদন করার চার সপ্তাহের মধ্যেই জাতিগত শংসাপত্র পেয়ে যাবেন আবেদনকারী।

পঞ্চায়েতের লাইসেন্স: পঞ্চায়েত এলাকায় ইঞ্জিন-ট্রলির মালিক বৈধ লাইসেন্স পান না। নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করার একমাসের মধ্যে লাইসেন্স দিতে হবে পঞ্চায়েতকে।

পুর পরিষেবা: পুর এলাকায় বাড়ির প্ল্যান অনুমোদনের জন্য মাত্র দু’মাস সময় দেওয়া হয়েছে পুরসভাকে। তার মধ্যে হয় অনুমতি দিতে হবে। না দিলে তার কারণও জানাতে হবে। জলের সংযোগের ক্ষেত্রে আবেদনের ১৫ দিনের মধ্যে সংযোগ দিতে হবে।

দমকল: পুজোর সময় উদ্যোক্তারা অস্থায়ী ‘এনওসি’ পাওয়ার জন্য আবেদন করলে দমকলকে ১৫ দিনের মধ্যে কমিটির হাতে তা তুলে দিতে হবে। গৃহস্থ বা ব্যবসায়ীরা ‘ফায়ার সেফটি লাইসেন্স’-এর জন্য আবেদন করলে সংশ্লিষ্ট উপভোক্তাকে দু’মাসের মধ্যে তা দিতে হবে।

কন্যাশ্রী: এই প্রকল্পে সরকার ঘোষিত সুবিধা পাওয়ার জন্য দরখাস্ত করার তিন মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে যাবে— এটাই নিয়ম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement